উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ। নিজস্ব চিত্র।
গত বৃহস্পতিবার কাঁথি-৩ ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের ওলুয়া গ্রামের খালে ভেসে উঠেছিল শতাধিক কচ্ছপের দেহ। ওই ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। অভিযোগ ওঠে, স্থানীয় একটি রাইস মিল থেকে ছড়ানো দূষিত জলেই প্রাণ হারিয়েছে কচ্ছপেরা। প্রশাসনও ওই ঘটনায় চাপে পড়ে যায়। তদন্তে নামে বন দফতর, পুলিশ। আর তার পরেই তদন্তে একে একে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় দুই চোরা কারবারিকে পাকড়াও করেছে কাঁথি থানার পুলিশ।
কাঁথি থানা সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে প্রথমেই খালের জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই সঙ্গে জাল ফেলে দেখা হয় এখানে কোনও মাছ রয়েছে কিনা। দেখা যায়, ওই দূষিত জলেই দিব্যি বেঁচে রয়েছে মাছেরা। যেখানে শতাধিক কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে সেই জলে কী ভাবে বেঁচে রয়েছে মাছেরা? খটকা লাগে পুলিশের। এরপর পুলিশ নিশ্চিত হয়, কচ্ছপের দেহ উদ্ধারের পেছনে রয়েছে কোনও বড়সড় চক্রের হাত।
কিছুটা সন্ধান করতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে ওই ওলুয়া গ্রামেরই বাসিন্দা স্বপন নায়ক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের আরও এক পান্ডা কাঁথির তেডুবি গ্রামের দুর্গাশঙ্কর মান্নাকেও পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে তাঁদের থেকে ৭০টি বিরল প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, তদন্তে ধৃতরা স্বীকার করেছে, এই ঘটনার পেছনে রয়েছে আন্তঃরাজ্য কচ্ছপ চোরাকারবারিদের একটি চক্র। পুলিশের জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, তাঁরা ওড়িশা থেকে কচ্ছপগুলি চোরাই পথে কাঁথিতে এনেছিলেন। কিন্তু আনার সময় ওড়িশায় কচ্ছপ বোঝাই গাড়িটি দুর্ঘটনার পড়ে। সেই গাড়ি থেকে কচ্ছপ নিয়ে আর একটি গাড়িতে করে কাঁথিতে এসে পৌছান চোরাকারবারিরা। দুর্ঘটনার জেরে শতাধিক কচ্ছপের মৃত্যু হয়। এর পর ধৃতেরা মৃত কচ্ছপগুলিকে ওই খালে ফেলে দিয়েছিলেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।