ছড়িয়ে পড়ছে অগ্নিপথ-বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র।
বিক্ষোভের জেরে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গিয়েছিল অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগের শর্ত। পরের ২৪ ঘণ্টায় অগ্নিবীরদের জন্য আরও চার দফা সুবিধার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ইতিমধ্যেই ১১ রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া অগ্নি-বিক্ষোভের জেরে চুক্তিভিত্তিক সেনা নিয়োগের প্রকল্পে আরও কতটা পিছু হটবে নরেন্দ্র মোদী সরকার?
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ মঙ্গলবার সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার (স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা) প্রধানদের বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছরের তরুণ-তরুণীদের অগ্নিবীর হিসাবে নিয়োগ করা হবে। এর পরেই বুধবার বিহারে শুরু হয় আন্দোলন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, ভারতীয় সেনায় সাধারণ ভাবে অফিসার এবং জওয়ান নিয়োগের বয়স ১৮-২৫ বছর। নতুন বয়ঃসীমায় অনেক যুবকই কাজের সুযোগ হারাবেন। তা ছাড়া, করোনা আবহে দু’বছর সেনায় নিয়োগ বন্ধ থাকায় চাকরিপ্রার্থীদের বয়স বেড়েছে। ফলে অনেকেরই আর সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের স্বপ্নপূরণ হবে না। বুধবার রাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রথম ব্যাচে অগ্নিবীর নিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ২১ থেকে বাড়িয়ে ২৩ করার কথা ঘোষণা করে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অগ্নিপথ প্রকল্পে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, জল এবং নৌসেনা) নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক ‘অগ্নিবীর’দের ৭৫ শতাংশকেই চাকরি পাওয়ার চার বছরের মধ্যে অবসর নিতে হবে। এককালীন কিছু টাকা মিললেও থাকবে না পেনশনের ব্যবস্থা। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (বিএসএফ, সিআরপিএফ, সিআইএসএফ, আইটিবিপি এবং এসএসবি)-তে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অগ্নিবীর’দের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলে এ ক্ষেত্রে তাঁরা প্রাক্তন সেনাদের সমান সুযোগ-সুবিধা পাবেন কি না, তা স্পষ্ট ছিল না।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ঘোষণা করেছে, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং অসম রাইফেলসে নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি, ‘অগ্নিবীর’দের প্রথম ব্যাচের জন্য ৫ এবং পরবর্তী ব্যাচগুলির জন্য তিন বছর বয়স ছাড়ের কথা জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে যোগদানের বয়ঃসীমা ২০-২৫ বছর। অর্থাৎ, চার বছর পরে অবসর নেওয়া ‘অগ্নিবীর’দের কেউই বয়সের কারণে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং অসম রাইফেলসে যোগদানে বঞ্চিত হবেন না।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও শনিবার তাঁর মন্ত্রকের ১০ শতাংশ চাকরি অবসরপ্রাপ্ত অগ্নিবীরদের জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা ঘোষণা করেছেন। সাধারণ ভাবে সেনার সমস্ত স্তরের কর্মী এবং অফিসারেরা অবসরগ্রহণের পরেও তাঁদের পদমর্যাদা (র্যাঙ্ক) ব্যবহারের অধিকারী। ‘অগ্নিবীর’রাও সেই সুযোগ পাবেন কি না, মঙ্গলবারের ঘোষণায় তা স্পষ্ট ছিল না। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র জানিয়েছে, আজীবন ‘অগ্নিবীর’ পরিচয় বহন করতে পারবেন তাঁরা।