দোলে প্রায় নির্জন দিঘার সৈকত। — ফাইল চিত্র।
গত বছরের দিঘার চেনা ছবি উধাও। গত বছর এই দিনে সৈকত নগরীতে থিকথিক করছিল ভিড়। জায়গা ছিল না পা ফেলার। এ বার পুরো উল্টো ছবি। অন্যান্য বারের দোলের দিনের মতো চেনা জনস্রোত এ বার আর আছড়ে পড়েনি দিঘায়। বরং তার বদলে দেখা গিয়েছে গুটিকয় পর্যটক। একই ছবি দেখা গিয়েছে তাজপুর, মন্দারমণি, শঙ্করপুর-সহ সমুদ্র তীরবর্তী জনপদগুলিতেও। দোলের ছুটিতে দিনে যে ভিড় আশা করেছিলেন তা পূরণ না হওয়ায় হতাশ হোটেল ব্যবসায়ীরা। কেন ভিড় জমছে না তা নিয়ে নতুন আশঙ্কার কথাও শুনিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
দিঘার হোটেল ব্যবসায়ীদের সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সব মিলিয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হোটেলে পর্যটকেরা উঠেছিলেন। যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি বলেই তাঁদের একাংশের মত। আর পাঁচটা সাধারণ ছুটির দিনে দিঘায় যেমন পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে এমনকি সেই ভিড়ও ছিল না মঙ্গলবার। ব্যবসায়ীদের মতে, আগাম বুকিং ছিল না। তা ছাড়া স্পট বুকিংয়েও আগ্রহ দেখাননি পর্যটকরা। তার জেরে চরম হতাশ ব্যবসায়ীরা।
এক সময়ের জমজমাট দিঘায় আচমকা কেন এমন পরিস্থিতি তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোরদার জল্পনা। দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘বিশেষ বিশেষ দিনগুলিতে হোটেলের দর বিপুল পরিমাণে বাড়িয়ে প্রচার করেন পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাংশ।’’ তিনি জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোর পর থেকেই বিশেষ দিনগুলিতে দিঘায় ভিড় তেমন জমছে না। বিপ্রদাসের কথায়, ‘‘গত বছর দোল এবং হোলির দিনে দিঘার সমস্ত হোটেল পরিপূর্ণ ছিল। অথচ এ বার পর্যটকদের মধ্যে সেই আগ্রহ দেখা যায়নি। দিঘা থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়। দিঘার হোটেল আসা পর্যটকদের যাতে কোনও রকম অসুবিধে না হয় সেই বিষয়ে আমরা আরও বেশি সতর্ক হচ্ছি।’’
আবার নতুন সঙ্কটের কথা জানিয়েছেন মন্দারমণি হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠনের কর্তা দেবদুলাল দাস মহাপাত্র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানুষের হাতে সে ভাবে পয়সা নেই। অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। সেই সঙ্গে সর্বত্র হোটেল গজিয়ে উঠছে প্রচুর।’’ তবে একটি ব্যাপারে তিনি এক মত, দোলের মতো ছুটির দিনে মঙ্গলবার দিঘায় যে সামান্য সংখ্যক পর্যটক এসেছেন, আগে এমনটা কখনও দেখা যায়নি বলেই মত তাঁর। তবে পর্যটকদের একাংশের অভিযোগ, দোলের ছুটিতে বাজার ধরার জন্য বহু ক্ষেত্রেই অনলাইনে বুকিংয়ে ‘হাউসফুল’ দেখানো হয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে আগাম বুকিং নেওয়া হয়নি। তার বদলে পর্যটকদের বাধ্য করা হয়েছে স্পট বুকিং করতে।