—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর-কাণ্ডের পরে রাজ্যে প্রথম জনমত যাচাইয়ের সুযোগ এসেছিল ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোট এবং দেশ জুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের সঙ্গে বাংলার পাঁচ জেলার ছয় কেন্দ্রেরও ফল ঘোষণা হতে চলেছে আজ, শনিবার। লোকসভা ভোটের পরেই রাজ্যের চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের মতোই এ বারও নিরঙ্কুশ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি, আর জি কর-কাণ্ডের কোনও প্রভাবই যে বৃহত্তর জনসমাজে নেই, এই ফলেই তা স্পষ্ট হবে। বিরোধীরা যদিও উপনির্বাচনের দিনই নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোটের নামে ‘প্রহসনের’ কথা বলেছে।
আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট, কোচবিহারের সিতাই, বাঁকুড়ার তালডাংরা, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া ও নৈহাটি আসনে গত ১৩ নভেম্বর ভোট হয়েছিল। তারই গণনা আজ সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়ার কথা। গণনা-কেন্দ্রের নিরাপত্তায় প্রতিটি জায়গাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা রেখেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
গত বিধানসভা ভোটে মাদারিহাট বাদে বাকি পাঁচটি কেন্দ্রেই জিতেছিল শাসক দল। গত লোকসভা ভোটেও সেই প্রবণতাই বজায় ছিল। এ বার তৃণমূল শিবিরের দাবি, ফল হবে ৬-০। ফলপ্রকাশের আগের দিন, শুক্রবারও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকার রাজ্যের দিকে-দিকে বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবাকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তারই ফল হিসেবে উপনির্বাচনের ৬টি আসনেই তৃণমূল জিতবে। শুধু এই উপনির্বাচনই নয়, ২০২৬-এও আড়াইশো আসন পেয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরবে!” পক্ষান্তরে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ভরসা রাখছেন মানুষের ‘ভোট দিতে পারার’ উপরে। তাঁর কথায়, “যেখানেই মানুষ ভোট দিতে পেরেছেন সেখানে এনডিএ এবং বিজেপির উপরেই তাঁরা আস্থা রাখবেন।”
‘গা-জোয়ারি’র অভিযোগে এক সুর বাম-কংগ্রেসেরও। তবে এ বারের ভোটে এই দুই শিবিরের আসন সমঝোতা হয়নি। কিছু আসনে লোকসভার তুলনায় ভোট বাড়ানোর দিকেই নজর দিয়েছে বামেরা। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের সঙ্গে বৃহত্তর বাম ঐক্য তৈরি এবং আইএসএফের সঙ্গে পুরনো সমঝোতা ফিরিয়ে আনার কাজও এই উপনির্বাচনে সিপিএম করেছে। বামেদের হাত ছেড়ে কংগ্রেস এ বার নেমেছে একক শক্তি-পরীক্ষায়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, “মানুষ যাঁকে গ্রহণ করবেন, কংগ্রেস সেটাই মেনে নেবে। কিন্তু যদি নির্বাচনটা ঠিক ভাবে হয়। বহু জায়গায় আমাদের এজেন্টদের বসতেই দেওয়া হয়নি, ভয় দেখানো হয়েছে।”
গণনাকে কেন্দ্র করে প্রথম স্তরে রাজ্য পুলিশ, দ্বিতীয় স্তরে রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং তৃতীয় স্তরে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নিরাপত্তা-ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। গণনা-কেন্দ্রের ভিতর ওয়েবকাস্ট হবে না। সেখানে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরার নজরদারি থাকবে। কমিশন সূত্রের খবর, ‘ইলেক্ট্রনিক্যালি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট সিস্টেমে’র গণনা হবে সবার আগে। তার পরে মূল ভোট-যন্ত্রের গণনা হবে।