রোহিত বলে দিলেন, যে মন্তব্য শাস্ত্রী করেছেন, তাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না তাঁরা। — ফাইল চিত্র
কিছু দিন আগেও তিনি ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন। ফলে সাজঘরের হাল-হকিকত সম্পর্কে ভালই জানেন। সেই ভারতীয় দলকেই ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী’ বলে সমালোচনা করেছিলেন রবি শাস্ত্রী। সেই মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে বুধবার কড়া সমালোচনা করলেন রোহিত শর্মা। ভারত অধিনায়ক তাঁর প্রাক্তন কোচকে ‘বহিরাগত’ বলে দেগে দিতেও পিছু হটলেন না। পাশাপাশি এটাও বলে দিলেন, যে মন্তব্য শাস্ত্রী করেছেন, তাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না তাঁরা।
বুধবার রোহিত বলেছেন, “সত্যি বলতে, দুটো ম্যাচ জেতার পর বাইরের কোনও লোক যদি বলেন যে আমরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়েছিলাম, তা হলে সেটা নেহাতই ছাইপাঁশ কথা। আমরা চারটে ম্যাচেই নিজের সেরাটা দেব, এই ভাবনা নিয়েই নেমেছি। দুটো ম্যাচ জেতার পর কেউ হারতে চায় না। এটাই সারসত্য। সাজঘরের অংশ নন যাঁরা, সেই বাইরের লোকেরাই এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কথা বলেন। কারণ সাজঘরের ভেতরে কী হচ্ছে, সেটা তাঁরা জানেন না। আমরা প্রতি ম্যাচে ভাল খেলতে চাই। যদি তাতে কারও খারাপ লাগে বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মনে হয়, তাতে আমরা পাত্তা দিই না।”
শান্ত স্বভাবের রোহিতকে এ ভাবে রেগে যেতে খুব কমই দেখা গিয়েছে। তা-ও আবার এমন একজনের বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন, যিনি কিছু দিন আগেও ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন এবং দলের নীতি নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা নিতেন। কেন তাঁর কথায় পাত্তা দিতে চান না, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রোহিতের সংযোজন, “রবি নিজেও কিছু দিন আগে সাজঘরের অংশ ছিলেন। উনি জানেন আমাদের মানসিকতা কোন জায়গায় থাকে।”
রোহিত আরও বলেছেন, “আমরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চাই। সেটাকেও ওর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। ঘরের মাঠে খেললে আমরা বিপক্ষকে এক ইঞ্চিও জায়গা দিতে চাই না। বিদেশে গেলেও আমাদের মানসিকতা একই থাকে।”
প্রসঙ্গত, ইনদওরে তৃতীয় টেস্টে ভারতের হারের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে শাস্ত্রী বলেছিলেন, “ভারতীয়রা আত্মতুষ্টি এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিল। কোনও কিছুকে বেশি সহজ ভাবে নিলে ক্ষতি হয়। এই ফলের একাধিক কারণ রয়েছে। ভারতের প্রথম ইনিংসের দিকে তাকালে বোঝা যাবে প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর অহেতুক আধিপত্য দেখানোর চেষ্টা করেছে ওরা। অতিরিক্ত চেষ্টাই ডুবিয়েছে।”
শাস্ত্রীর মতে হারের অন্যতম কারণ, প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ব্যর্থতার চাপ রোহিতদের কাটিয়ে উঠতে না পারা। তিনি বলেছিলেন, “সব কিছু মিলিয়েই এই ফলাফল। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা মানসিক চাপ তৈরি করেছিল। সেটা ম্যাচের বাকি অংশেও প্রভাব ফেলেছে।” লোকেশ রাহুলকে প্রথম একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অবশ্য সমর্থন করেছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন কোচ। শাস্ত্রী বলেছিলেন, “শুধু পদের জন্য কেউ দলে জায়গা আটকে রাখতে পারে না।” ইনদওর টেস্ট শুরুর আগেও রাহুলকে খেলিয়ে যাওয়ার সমালোচনা করেছিলেন শাস্ত্রী। ব্যাটিং ব্যর্থতা প্রসঙ্গেও তাঁর মত, আগে থেকে কোনও কিছু ধরে নিয়ে খেললে ফল ভাল হয় না। শুধু শাস্ত্রীই নন, ইনদওর টেস্টে ভারতীয় দলের পরিকল্পনা এবং পারফরম্যান্সের সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাওস্করও।