দোকান্ডায় পর্যটেকেরা। নিজস্ব চিত্র
এবার বড়দিনে রেকর্ড ভিড় দেখেছে দোকান্ডা। আগামী টানা তিন মাস পর্যটকদের সেই ভিড় চলবে। পাঁশকুড়া বাজার থেকে কংসাবতী নদীর বাঁধ বরাবর রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বেহাল রাস্তায় পর্যটকদের গাড়ি এবং বাইকের ধুলোয় নাকাল হতে হচ্ছে পথচারীদের। রাস্তায় ধুলো উড়ে গিয়ে মিশছে ফুলে। রাস্তা মেরামতির দাবিতে সরব হয়েছেন পর্যটক থেকে ফুলচাষিরা।
পাঁশকুড়ার ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার দোকান্ডায় ফুলবাগিচার টানে ফি বছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পর্যটকদের ঢল নামে। সেই ঢল সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। ফুলবাগানের পাশে কংসাবতী নদীর চরে বসে মেলাও। মেলায় ফুলের পাশাপাশি আনাজ, ফুলের চারা, ফাস্টফুড সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের স্টলও বসে। বাইকের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে ছোট গাড়ি, বাস ভাড়া করে দোকান্ডায় আসেন পর্যটকরা। নদীর চরে চলে পিকনিক। পাঁশকুড়া বাজার থেকে দুটি পথ ধরে দোকান্ডায় যাওয়া যায়। সদর ঘাট ব্রিজ পেরিয়ে কংসাবতী নদীর বাঁধ বরাবর রয়েছে একটি রাস্তা। সেটি ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে। আরেকটি রাস্তা হল পাঁশকুড়া থানার পাশ দিয়ে কংসাবতী নদীর বাঁধ বরাবর ৩ কিলোমিটার রাস্তা। রাস্তাটি পাঁশকুড়া পুর এলাকার মধ্যে পড়লেও এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সেচ দফতরের। বহু বছর আগে রাস্তাটি পাকা করেছিল পাঁশকুড়া পুরসভা। কয়েক বছর আগে রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। পাকা রাস্তার সমস্ত পাথর উঠে এখন কার্যত চলাচলের অযোগ্য। পর্যটকদের গাড়ি এবং বাইক যাওয়ার সময় ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ।
ভবানীপুর ও পশ্চিম কোলায় কংসাবতীর চরে ব্যাপক হারে চাষ হয় চন্দ্রমল্লিকা। এলাকাগুলি পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এখানকার চন্দ্রমল্লিকা ভিন্ রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি হয়। বেহাল রাস্তা দিয়ে দোকান্ডাগামী অসংখ্য গাড়ি, মোটরবাইক যাওয়ার সময় ধুলোয় ঢেকে যাচ্ছে চন্দ্রমল্লিকার বাগান। ধুলোয় ভরা ফুলের পাপড়িতে শিশির পড়ে নষ্ট হচ্ছে ফুলের গুণগত মান। শুধু তাই নয়, ছুটির দিনগুলিতে দোকান্ডাগামী রাস্তায় যানজট এতটাই থাকে যে ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল নিয়ে সময়মতো ট্রেন কিংবা বিমান ধরতে পারেন না। পশ্চিম কোলা গ্রামের চন্দ্রমল্লিকা চাষি লক্ষ্মীকান্ত বাগ বলেন, ‘‘বেহাল রাস্তার জন্য প্রচুর ধুলো উড়ছে। ধুলোর আস্তরণ পড়ে ফুলের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে। পাঁশকুড়া পুরসভা প্রথম প্রথম রাস্তায় জল দিত। এখন আর দেয় না। আমরা চাই রাস্তাটি পাকা করা হোক।’’
রিকি দত্ত নামে হাওড়ার এক পর্যটক বলেন, ‘‘শুধু দোকান্ডা নয়। ভবানীপুর এবং পশ্চিম কোলার ফুলের বাগান দেখার জন্য আমরা প্রতি বছর এই রাস্তা ধরে দোকান্ডায় আসি। কিন্তু রাস্তাটি খুব খারাপ। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা মেরামত করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক প্রশাসন।’’ পাঁশকুড়া পুরসভার প্রশাসক নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘রাস্তাটি সেচ দফতরের হলেও পুর এলাকার মধ্যে। পুরসভার তহবিল থেকে রাস্তা মেরামত করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’