আবু তাহের। —ফাইল চিত্র।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হলদিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন তৃণমূল নেতা আবু তাহের। দীর্ঘ দিন ধরে সিবিআইয়ের খাতায় ফেরার ছিলেন নন্দীগ্রামে শাসকদলের এই নেতা। তাঁর নামে হুলিয়াও জারি হয়েছিল। সেই সময় গ্রেফতারি এড়াতে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাহের। কিন্তু শীর্ষ তাঁকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। সেই মতো শনিবার আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তাহেরের আইনজীবী মনসুর আলম জানান, আদালত তাঁকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরের দিন নন্দীগ্রাম জুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেই সময় চিল্লোগ্রামে বিজেপি সমর্থক দেবব্রত মাইতিকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় দেবব্রতের। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তভার নেয় সিবিআই। সেই তদন্তে উঠে আসে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের নাম। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে ছিল তাহেরের নাম। কিন্তু অভিযোগ, তাহের প্রথম থেকেই সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ এড়াচ্ছিলেন।
শনিবার দুপুর ২টো ১০ নাগাদ নিজের গাড়িতে করে পুত্র ও আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে হলদিয়া আদালতে আসেন তাহের। আদালতের নির্দেশের পর তাঁর পুত্র শেখ আসলাম বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের চিঠিতে বাবাকে কখনও সাক্ষী হিসাবে, আবার কখনও অভিযুক্ত হিসাবে ডাকা হয়েছে। তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেই সিবিআইয়ের মুখোমুখি হননি উনি। আমরা ওঁর জামিনের আবেদন নিয়ে হাই কোর্টে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাই। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আজ শেষ দিন ছিল। আমরা আদালতের নির্দেশ মেনেই আত্মসমর্পণ করেছি।’’
তৃণমূল সেলের আইনজীবী মনসুর বলেন, ‘‘আবু তাহেরের বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আজ উনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। মামলাটি ইতিমধ্যে দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতে চলে গিয়েছে। আমরা নিয়ম মেনেই আগামী ১৯ তারিখ তাহেরের জামিনের জন্য নির্দিষ্ট আদালতে আবেদন জানাব।’’