তলবি সভার তাল ঠোকাঠুকি

পুলিশের নজরদারিতেই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুরসভা পৌঁছন নির্মল। পুরপ্রধানের ঘরে বসে কাজও করেন তিনি। দুপুর ১২টা নাগাদ গোবিন্দ-সহ ছয় কাউন্সিলর ঘাটালে গিয়ে মহকুমাশাসক অসীম পালের সঙ্গে দেখা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামজীবনপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২২
Share:

পুরসভায় বোর্ড খুলে নিচ্ছে পুলিশ।

তলবি সভার ২৪ ঘণ্টার পরও তপ্ত রামজীবনপুর।

Advertisement

পুরবোর্ড দখল ঘিরে নাটক শুরু হয়েছিল বুধবার। বৃহস্পতিবার দৃশ্যপট বদলাল ঘন ঘন। সকাল হতেই পুলিশে ছয়লাপ শহর। তারপর ব্যস্ততা ঘাটাল এসডিও অফিসে। প্রথমে পৌঁছলেন তলবি সভা ডেকে পুরবোর্ড দখলের দাবি করা বিজেপির কাউন্সিলরেরা। কিছুক্ষণ পরে তৃণমূলের নির্মল চৌধুরী। তাঁর নেতৃত্বাধীন পুরবোর্ডের বিরুদ্ধেই বুধবার তলবি সভা ডাকে বিজেপি। তবে যাননি তৃণমূল কাউন্সিলররা। ছিলেন না কোনও প্রশাসনিক কর্তাও। বিজেপি কাউন্সিলরেরাই তলবি সভা ডেকে পুরবোর্ড দখলের দাবি করেন। গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়কে নয়া পুরপ্রধান ঘোষণা করে বিজেপি। তৃণমূল দাবি করে, তলবি সভা বেআইনি। প্রশাসনেরও বক্তব্য ছিল তাই।

পুরসভায় তাণ্ডব চালানো, সম্পত্তি চুরি-সহ একাধিক অভিযোগে বুধবার রাতেই গোবিন্দ-সহ বিজেপির পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন নির্মল। তলবি সভার পর পুরপ্রধানের ঘরে গিয়ে বসেছিলেন গোবিন্দ। তাঁর জন্য আনা হয়েছিল পৃথক চেয়ার। পাল্টে দেওয়া হয়েছিল নেমপ্লেট।

Advertisement

সেই অভিযোগের তদন্তে এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ পুরসভায় পৌঁছয় পুলিশের দল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পাশাপাশি পুলিশ নেমপ্লেট ও বোর্ড বাজেয়াপ্ত করে। পাঁচ অভিযুক্তকে ২৮ অক্টোবর থানায় ডাকা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, “রামজীবনপুর পুরসভার চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

পুলিশের নজরদারিতেই সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুরসভা পৌঁছন নির্মল। পুরপ্রধানের ঘরে বসে কাজও করেন তিনি। দুপুর ১২টা নাগাদ গোবিন্দ-সহ ছয় কাউন্সিলর ঘাটালে গিয়ে মহকুমাশাসক অসীম পালের সঙ্গে দেখা করেন। তলবি সভা ও চেয়ারম্যান নিবার্চন নিয়ে কথাবার্তা হয়। তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক পর সেখানে পৌঁছন নির্মল। তাঁর সঙ্গেও কথা বলেন মহকুমা শাসক।

প্রশাসনের দ্বারস্থ দু’পক্ষই। নিজেদের অবস্থানেও অনড় তারা। গোবিন্দ বলেন, “যা হয়েছে নিয়ম মেনে হয়েছে। মহকুমা শাসককে সব জানিয়েছি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “আগেও বলেছি, এখনও বলছি। তলবি সভা বেআইনি। ওরা (বিজেপি) গা জোয়ারি করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছে। পুলিশ-প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে।” পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে সঙ্কল্প যাত্রায় গিয়ে এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘ওরা (তৃণমূল) করলে গণতন্ত্র। আমরা করলে বেআইনি।’’ সন্ধ্যায় রামজীবনপুর পৌঁছন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তলবি সভাকে বৈধ বলছে না প্রশাসনও। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘আইন মেনে তলবি সভা ডাকা হয়নি। তলবি সভার দিনে পুরপ্রধান নিবার্চন করা যায় না। পুরো প্রক্রিয়াটাই অবৈধ।”

রামজীবনপুর পুরসভার দখল নিয়ে দু’পক্ষের টানাপড়েন চলছিল বহুদিন। তলবি সভার পরে বেড়েছে জটিলতা। এ বার এফআইআর হল বিজেপি বিরুদ্ধে। তদন্তে নামল পুলিশ। সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরসভার গেট ও আশপাশে ছিল প্রচুর পুলিশকর্মী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement