Tamluk

মমতার ধমক, দখলমুক্তির পুর-প্রস্তুতি

রাস্তার ফুটপাত ও নিকাশিনালা দখল করে দোকান, বেআইনি পার্কিং, রাস্তার একাংশ দখল করে দোকানের জিনিসপত্র রেখে ব্যবসা—এমন ছবি গা সওয়া হয়ে গিয়েছে তমলুকবাসীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৮:১১
Share:

তমলুকের মানিকতলা থেকে নিমতলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় নালার উপরে অস্থায়ী নির্মাণ। — নিজস্ব চিত্র।

একাধিক পুরসভার কার্যকলাপ নিয়ে গত সোমবার নবান্নের বৈঠকে প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাস্তাঘাট বেআইনি দখলদার মুক্ত করার অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করল তমলুক পুরসভা।

Advertisement

নবান্নের বৈঠকে মূলত বেআইনি ভাবে রাস্তা, ফুটপাথ দখল, বেআইনিভাবে বহুতল নির্মাণ, বেহাল নিকাশি ও আবর্জনা জমে থাকা নিয়ে পুরসভার কর্তা থেকে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে কার্যত ধমক দেন তিনি। এর মধ্যে মধ্যে কাঁথি, হলদিয়া ও পাঁশকুড়া পুরসভা নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তমলুক পুরসভা নিয়ে তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও তাঁর ভর্ৎসনার জেরে মঙ্গলবার থেকেই জেলা সদর তমলুক শহরে রাস্তা ও নিকাশিনালা বেদখল মুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।

রাস্তার ফুটপাত ও নিকাশিনালা দখল করে দোকান, বেআইনি পার্কিং, রাস্তার একাংশ দখল করে দোকানের জিনিসপত্র রেখে ব্যবসা—এমন ছবি গা সওয়া হয়ে গিয়েছে তমলুকবাসীর। দখলের জেরে রাস্তায় চলাচলের জায়গা ক্রমশ সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়ায় নিত্য যানজট হয়।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালেই পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, উপ-পুরপ্রধান লীনা মাভৈ রায় ও পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক সুমিত বসু এবং পুরসভার নিকাশি ও জঞ্জাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর অলক সাঁতরা এবং পূর্ত দফতরের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সুব্রত রায়ের উপস্থিতিতে জরুরি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া অন্যতম প্রধান রাস্তা হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ও তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের পাশে সরকারি জায়গা জবরদখল করে গড়ে তোলা দোকান-বসতবাড়ি উচ্ছেদ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের আগে আগামী শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের বৈঠক হবে।

তমলুকের মানিকতলা মোড় থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের অংশে বেআইনি দখল উচ্ছেদ করে সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছিল বছর ছয়েক আগে। কিন্তু সম্প্রসারণের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই শহরের শঙ্করআড়া, হাসপাতাল মোড়, নিমতলা মোড়ের কাছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে ফুটপাথ ও নালা দখল করে বহু অস্থায়ী দোকানপাট গড়ে ওঠে। বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি পার্কিং চলছে।

নালার উপরে ও ধারে গড়ে ওঠা দোকানের আবর্জনায় নিকাশি নালা বুজে এসেছে। সেখানে তৈরি হয়েছে মশামাছির আঁতুড় ঘর। শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের মানিকতলা, জেলখানা মোড়, পুরসভা অফিস, ভীমার বাজার, বড়বাজার ও নিমতলা মোড়ের কাছেও অস্থায়ী দোকানপাটের সামগ্রী পড়ে থাকে।

এমন দখল নিয়ে বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি সুকান্ত চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘শঙ্করআড়া থেকে হাসপাতাল মোড় হয়ে নিমতলা মোড় এবং শঙ্করআড়া থেকে মানিকতলামোড় পর্যন্ত দখল করে দোকান, গাড়ি পার্কিং চলছে। জেনারেটর রাখা হচ্ছে। তৃণমূল পরিচালিত পুর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ও কাউন্সিলরের মদতে এ সব হচ্ছে।’’

যদিও তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘চলতি বছরের প্রথম দিকেই পুরসভার উদ্যোগে শহরের নিমতলা থেকে মানিকতলা মোড় পর্যন্ত হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ফুটপাত ও নিকাশি নালা দখল করে থাকা দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নালা পরিষ্কারও করা হয়। ফের দখলের বিষয় নজরে এসেছে। শুক্রবার থেকে উচ্ছেদ অভিযানে নামা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement