ধৃত তিন। নিজস্ব চিত্র
নিগৃহীত চিকিৎসকের অভিযোগ, তাঁকে চড় মেরেছেন মৃত রোগীর এক মহিলা আত্মীয়। পুলিশ অবশ্য তিন জন পুরুষকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করল। সেই সঙ্গে জেলা সুপার স্পেশালিটি চত্বরে পুলিশের নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। শনিবার ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অর্ণাশিস হোতাকে মারধরের অভিযোগে ধৃত ওই তিন জনকে রবিবার ঝাড়গ্রাম সিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতেরা হলেন— উত্তর বামদার বছর পঞ্চান্নোর ভবেশ দাস, ভালুকখুলিয়ার বছর আটত্রিশের রঞ্জিত ভুই ও নতুনডিহির বছর চব্বিশের বাবুল নামহাতা। তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী কৌশিক সিংহ আদালতে অভিযোগ করেন, ‘‘এক মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হলেও পুলিশ তিনজন নির্দোষকে গ্রেফতার করে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে চাইছে।’’ যদিও সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডলের দাবি, ‘‘ঘটনার সময়ে এই তিনজনও হাজির ছিলেন। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে।’’ তিনজনকেই ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শাসক দলেরও। সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, ‘‘শনিবার মৃতের কয়েকজন মহিলা পরিজনকে সঙ্গে নিয়ে অজিত হাসপাতালের ভিতরে ঢুকেছিলেন। ওই ঘটনার অনেক প্রত্যক্ষদর্শী রয়েছেন।’’ অজিত অবশ্য বলছেন, ‘‘আমার সামনে কোনও মারধর হয়নি।’’ তবে দলের অনুমতি ছাড়া কেন অজিত হাসপাতালে গিয়েছিলেন তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একাংশের মতে, অজিতের সঙ্গে জেলাশাসকের সুসম্পর্কের সমীকরণেই হয়তো তিনি গিয়েছিলেন। যদিও জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।’’
গত শুক্রবার করোনা হাসপাতালে মৃত সত্যনারায়ণ দাস নামে এক যুবকের পরিজনেরা রাতেই হাসপাতালের এক কর্মীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। সুপারের সঙ্গে দেখা করতে মৃতের মা, স্ত্রী ও শাশুড়ি হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে পড়েন। ওই সময়ই চিকিৎসক অর্ণাশিসকে সামনে পেয়ে মৃতের এক পরিজন চড় মারেন বলে অভিযোগ। অর্ণাশিস হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, মৃত সত্যনারায়ণের এক মহিলা আত্মীয় তাঁকে চড়-থাপ্পড় মেরে গালিগালাজ করেছেন।