শুভেন্দু আধিকারী।
এক জন বিরোধী দলনেতা। অন্য জন বিধায়ক। তবে সদ্য পদ হারিয়েছেন দলের জেলা সভাপতির। ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ায় দু’জনই সারলেন জনসংযোগ।
মঙ্গলবার জেলা সদর তমলুকে একটি আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উপলক্ষ্য ছিল শহরের একটি ক্লাবের কালী পুজোর মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন এবং দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ। শালগেছিয়ায় হরিজন পল্লির অগ্রগামী সঙ্গে পুজো মণ্ডপে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আসেন শুভেন্দু। প্রতিমা দর্শনের পরে ক্লাবের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গিয়ে দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ করেন। এরপর রাত প্রায় ৯ টা নাগাদ নিজের গাড়িতে না ওঠে শালগেছিয়া থেকে নিমতলা মোড়গামী রাজ্য সড়কে হাঁটা শুরু করেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর সঙ্গে পা মেলান বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক দেবকমল দাস এবং তমলুক নগর মণ্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী, দলের স্থানীয় নেতারা। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক পর্যন্ত প্রায় আধ কিলোমিটার রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময়ে বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের সামনে ও রাস্তায় থাকা মানুষজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে শুভেচ্ছা জানান শুভেন্দু।
বুধবার বিকেলেও কাঁথিতে নিজের বাড়ির ‘শান্তি কুঞ্জে’র অদূরে ক্যানাল পাড়ে যান শুভেন্দু। সেখানে একটি মণ্ডপে কালী প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি, স্থানীয়দের অভাব অভিযোগের কথা তিনি শোনেন। এরপর শুভেন্দু দেশপ্রাণ ব্লকের কুলতলিয়া যান। সেখানেও প্রতিমা দর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে জনসংযোগ সারেন। সঙ্গী ছিলেন উত্তর কাঁথির বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিংহ। শুভেন্দু এই দু’দিন তেমন কোনও বক্তৃতা না করলেও তাঁর এই জনসংযোগের কৌশলে উচ্ছ্বসিত বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে বিরোধী দলনেতা ওই ক্লাবের পুজো মণ্ডপে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানের পর আচমকা তিনি হেঁটে নিমতলা মোড় পর্যন্ত যান। পথচলতি মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গিয়েছে।’’
এ দিকে দলের জেলা (তমলুক) সভাপতির পদ হারালেও জনসংযোগে ছেদ পড়েনি তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের। এ দিন পাঁশকুড়া শহরে তাঁর বাড়িতে ভাইফোঁটা দিতে হাজির হয়েছিলেন তমলুক শহর ও ব্লক, শহিদ মাতঙ্গিনী ও পাঁশকুড়া ব্লকের নেতা-কর্মী, সাধারণ সমর্থক। বিকেলে তমলুকের কাকগেছিয়াতে নিজের জেঠতুতো দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সৌমেন। সেখানেও তিনি জনসংযোগ সারন। সৌমেন বলেন, ‘‘সকাল শুভেচ্ছা বিনিময় করে জনসংযোগ সেরেছি। তবে চোখের সমস্যার কারণে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের তরঙ্গখালি গ্রামে একটি ক্লাবের উদ্যোগে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারিনি।’’
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমেই রাজনৈতিক নেতাদের জনসংযোগের রেওয়াজ রয়েছে। এ বছরও পুজোর উদ্বোধন ঘিরে শুভেন্দু অধিকারী এবং সৌমেন মহাপাত্রের ‘ঠাণ্ডা লড়াই’ দেখা গিয়েছে। লোকসভা ভোটের আগেও তাঁদের সেই জন সংযোগের কাজে বিরাম নেই।