ঘাটাল শহরে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল, কিংশুক গুপ্ত ও কৌশিক সাঁতরা
নতুন নাগরিকত্ব আইন বিরোধী মিছিল থেকে পুরভোটের কথা মনে করালেন পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার ঘাটাল শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়াম থেকে ময়রাপুকুর পর্যন্ত মিছিল হয়। সেই মিছিল শেষে এক পথসভায় শুভেন্দু বলেন, “সামনেই পুরভোট। ঘাটাল মহকুমায় পাঁচটি পুরসভাতেই পুনরায় ক্ষমতায় আসতে হবে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের আগে এটাই হবে সেমিফাইনাল ভোট।” একই কর্মসূিচতে এদিন ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘ভোট আসুক। আমরা জানি কীভাবে ভোটে জিততে হয়।’’
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এ দিন মিছিল এবং পথসভার আয়োজন করেছিলেন ঘাটাল মহকুমা তৃণমূল নেতৃত্ব। ঘাটাল ব্লক ছাড়াও চন্দ্রকোনা- ১ এবং ২, দাসপুর-১ এবং ২ ব্লক থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ঘাটালে এসে মিছিলে হাঁটেন। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন শুভেন্দু। ছিলেন ঘাটাল মহকুমার তিন বিধায়ক শঙ্কর দোলই, মমতা ভুঁইয়া এবং ছায়া দলুই-সহ অন্য নেতৃত্বেরা। ময়রাপুকুর মোড়ে পথসভা থেকে শুভেন্দু বলেন, “লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন কয়েক পরে ঘাটালে এসেছিলাম। সেইদিন এখানকার নেতা কর্মীদের চোখে মুখে একটা আতঙ্কের ছাপ। কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই নেতাদের নেতৃত্বে এতবড় মিছিল সংগঠিত হল। এটাই হল গণতন্ত্র।”
একই বিষয়ে মিছিল হয়েছে মেদিনীপুরেও। দুপুরে মেদিনীপুর কলেজ মাঠের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়েছিল। জেলা পরিষদ রোড হয়ে কালেক্টরেট মোড়ের সামনে এসে মিছিল শেষ হয়। মিছিলে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, বিধায়ক দীনেন রায়, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহেরা। মেদিনীপুরের কালেক্টরেট মোড়ের সামনে হয় পথসভা। সেখানে সুব্রতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘অযথা গুজবে কান দেবেন না। অযথা নিজের অস্তিত্বের জন্য দৌড়ঝাঁপ করে বেড়াবেন না। নিজে নিজের জায়গায় থাকুন।’’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘‘যদি কেউ অসুবিধায় পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যাবেন। তিনি তাঁকে নাগরিকত্ব দেবেন।’’ মিছিলে শামিল হওয়া তৃণমূল কর্মীদের গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আমরা সবাই নাগরিক।’ সুব্রতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সিটিজেন সার্টিফিকেট আছে, এমন একটা মানুষকেও খুঁজে পাবেন না। নতুন আইন তৈরি করে রাজ্যে রাজ্যে বিভাজনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেছেন, বাংলা এনআরসি করতে দেবেন না। এই কালা আইন আমরা মানি না।’’ এদিন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে খড়্গপুরের চৌরঙ্গি থেকে ইন্দা পর্যন্তও মিছিল হয়। ছিলেন অজিত মাইতি, সাংসদ মানস ভুঁইয়া, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র প্রমুখ। মিছিল শেষে পথসভাও হয় ইন্দায়।
পথে নেমেছিল বামেরাও। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নের ডাকে দেশজুড়ে ধর্মঘটের সমর্থনে এ দিন ঘাটালে সভা করেছে বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলি। সভায় ছিলেন সিটুর জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস।