বিধানসভা চত্বরে নেতাই হাই স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষকরা। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার দুপুর দেড়টা। বিধানসভার দ্বিতীয়ার্ধ্বে ভূমি দফতরের বিল নিয়ে তখন সরকার বনাম বিরোধীদের জোর আলোচনা চলছে। গ্যালারির ৪৩ জোড়া চোখে তখন অপার বিস্ময়!
লালগড়ের নেতাই হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রছাত্রীরা বিধানসভার অধিবেশন দেখতেই কলকাতায় গিয়েছিল। দলে নেতাইয়ের স্বজনহারা পরিবারের দুই ছাত্রীও ছিল। এই উদ্যোগ রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদারই। বিরবাহা ঝাড়গ্রামের বিধায়ক। লালগড় ব্লকও ঝাড়গ্রাম বিধানসভার মধ্যেই পড়ে।
নেতাই থেকে সকাল সাড়ে ছ’টায় ৪৩ জন ছাত্রছাত্রী, টিচার ইনচার্জ-সহ তিন শিক্ষক এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষককে নিয়ে বাতানুকূল বাস কলকাতা রওনা দেয়। বৃষ্টি ও যানজটে বিধানসভায় পৌঁছতে কিছুটা দেরি হওয়ায় প্রথমার্ধ্বের প্রশ্নোত্তর পর্ব দেখার সুযোগ হয়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধ্বে আলোচনা পর্ব দেখার আগে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের স্পিকারের ঘরে নিয়ে যান বিরবাহা। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষদের সঙ্গে ছবি তোলেন তাঁরা। বিধানসভার ক্যান্টিনে ছিল খাওয়ার ব্যবস্থাও।
বিরবাহা বলছেন, ‘‘ওরা খুব খুশি হয়েছে। এতে পড়ুয়াদের মধ্যে বিধানসভা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হবে। স্কুল সংসদ পরিচালনাতেও তাদের পারদর্শিতা বাড়বে।’’ স্কুলের টিচার-ইনচার্জ দেবাশিস গিরি বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীরা রোমাঞ্চিত। আমরাও প্রথম বিধানসভা দর্শন করলাম। মন্ত্রী তথা বিধায়কের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’’
দুই ছাত্রী অনন্যা গোস্বামী ও রাখি ঘোড়ই বলে, ‘‘দারুণ অভিজ্ঞতা।’’ নেতাই-কাণ্ডে গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল অনন্যার দাদু ধ্রুবপ্রসাদ গোস্বামী ও রাখির জেঠিমা সরস্বতী ঘোড়ইয়ের। অনন্যা জানায়, একবার স্কুলে এসে বিরবাহা জানতে চান তারা ভবিষ্যতে কী হতে চায়। কেউ শিক্ষক, কেউ নার্স, কেউ ডাক্তার হওয়ার কথা বলেছিল। এ দিন মন্ত্রী তাদের বলেন, ‘‘তোমরা কেউ রাজনীতিক হতে চাওনি। তাই বিধানসভা দেখালাম। দেশের স্বার্থে শিক্ষিত তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন।’’