অনুতপ্ত শ্রীকান্ত, বিজেপি বর্জনে বাকি বিধায়কেরা

একদিন আগেই দলের পক্ষ থেকে ‘শো- কজ’ করা হয়েছে শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে। দলের নির্দেশ অমান্য করে স্কুলের অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের সঙ্গে একই মঞ্চে বসার ‘শাস্তি’ হিসেবেই রবিবার দল থেকে তাঁকে শো -কজ করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৩
Share:

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিতির কারণেই শো কজ করা হয় শ্রীকান্ত মাহাতোকে। ফাইল চিত্র

যিনি কোপে পড়েছেন তিনি ‘অনুতপ্ত’। আর বাকিরা বলছেন, সর্বতো ভাবে বিজেপি বর্জনের কথা।

Advertisement

একদিন আগেই দলের পক্ষ থেকে ‘শো- কজ’ করা হয়েছে শালবনির তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে। দলের নির্দেশ অমান্য করে স্কুলের অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের সঙ্গে একই মঞ্চে বসার ‘শাস্তি’ হিসেবেই রবিবার দল থেকে তাঁকে শো -কজ করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

তারপর সোমবার নিজের বিধা নসভা কেন্দ্রে কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন শ্রীকান্ত। এ দিনই শো-কজের চিঠি পেয়েছেন তিনি। সন্ধ্যায় শ্রীকান্তের গলায় অনুতাপের সুর। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘খুব ভুল হয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠানে না গেলেই ভাল হত।’’ ভবিষ্যতে বিজেপি নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কি একই মঞ্চে থাকবেন? শ্রীকান্তের উত্তর, ‘‘আর ভুল করি! আর কখনও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে মঞ্চে আমাকে পাবেন না। ওখানেও কি থাকতাম। না জেনে চলে গিয়ে এখন অনুশোচনানায় ভুগছি।’’ শো-কজের জবাব কয়েকদিনের মধ্যেই দিয়ে দেবেন বলে তিনি এ দিন জানান।

Advertisement

বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পাশে মেলার মঞ্চে বসার মাশুল গুনেছিলেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাশ। দল শো-কজ করে তাঁকে। তারপর কোপে পড়েন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত। সমরেশের বক্তব্য ছিল, দলের নির্দেশ মানতেই হবে। তবে এতে জনমানসে ভুল বার্তা যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় সব তৃণমূল বিধায়কই অবশ্য বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বতো ভাবে বিজেপি-র সংসর্গ এড়িয়ে যাওয়ার কথাই বলছেন।

কয়েকমাস আগে গড়বেতায় এক অনুষ্ঠানে বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রমের সাথে একই মঞ্চে দেখা যায় গড়বেতার তৃণমূল বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীকে। তা নিয়ে দলের অন্দরে শোরগোল পড়েছিল। সোমবার আশিস বলেন, ‘‘তখনকার পরিস্থিতি আলাদা, এখনকার পরিস্থিতি আলাদা। নাগরিকত্ব আইনের নামে বিজেপি যে কালাকানুন চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে তার বিরুদ্ধে আমাদের এখন অল-আউট ফাইট।’’ এখন কি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে থাকবেন? আশিস ছাড়াও ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই, দাসপুরের মমতা ভুঁইয়া, চন্দ্রকোনার ছায়া দোলই সকলেরই মত, নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। ওদের নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকবেন না।

মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতিরও বক্তব্য, ‘‘বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে বসার প্রশ্নই নেই।’’ একই সুর আর এক বিধায়ক দীনেন রায়ের। খড়্গপুর গ্রামীণের এই তৃণমূল বিধায়ক এদিন বলেন, ‘‘বিজেপি নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে বসতে পারব না।’’ এই দুই বিধায়কের দাবি, অনুষ্ঠানের আয়োজকরা তাঁদের ডেকেছেন, আবার বিজেপির সাংসদকেও ডেকেছেন, এখনও এমন ঘটনা ঘটেনি।

জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তা সবারই মেনে চলা উচিত। দলের এই নির্দেশ জানাতে খুব শীঘ্রই দলের বিধায়ক-সহ জেলা ও ব্লকের নেতাদের নিয়ে বসা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement