Tamluk

সমবায়ে চাপানউতোর বিজেপি-তৃণমূলের

তমলুক সমবায় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন (কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট) ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এক দিন দুর্নীতির অভিযোগ করছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার পরদিনই আবার ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পাল্টা দাবি করছেন, শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত মেঘনাদ পাল এবং নিকুঞ্জ মান্না নামে দুই ব্যক্তি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান থাকাকালীন বিভিন্ন দুর্নীতি করেছেন। যা ঘিরে শুরু তৃণমূল-বিজেপি তরজা। কৃষক এবং গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের কথা ভেবে পথ চলা শুরু হয়েছিল সমবায় ব্যাঙ্কগুলির। সেই সমবায় ব্যাঙ্কগুলি ঘিরেই বর্তমানে যেভাবে রাজনৈতিকউতোর শুরু হয়েছে, তাতে উদ্বিগ্ন গ্রাহকদের একাংশ।

Advertisement

তমলুক সমবায় কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন (কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট) ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি করে বিজেপি। ওই কর্মসূচিতে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ব্যাঙ্কে দুর্নীতি হয়েছে এবং ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া কৃষকদের সুদে প্রাপ্য ছাড় দেওয়া হয়নি। শুভেন্দুর নিশানায় ছিলেন সমবায় ব্যাঙ্কে বর্তমান তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান সত্যরঞ্জন সাহু। শুভেন্দুর ওই দিন বলেন, ‘‘এঁরা ব্যপক দুর্নীতি করছেন। আমার কাছে সব তথ্য এসেছে। আমি নাবার্ড-এর কাছে পাঠাব।’’ দলীয় নেতার কর্মসূচির পরে শনিবারই বিজেপির কিসান মোর্চার তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটি ওই সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছে। তাতেও তারা অভিযোগ করে, ঋণ গ্রহীতা কৃষকরা ২০০১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সুদে ছাড় বাবদ সুবিধা পাননি। যার পরিমাণ প্রায় ৮০ কোটি টাকা।

এমন আবহে বিজেপির তোলা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যরঞ্জন সাহুর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে রয়েছি দু’বছরেরও কম সময়। তাঁর আগে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন মেঘনাদ পাল ও নিকুঞ্জ মান্না। দু’জনেই শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। আমাদের ব্যাঙ্কে ঋণদান ও কর্মী নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছিল, তা ওই দুজনের আমলেই হয়েছিল। আমি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার পরে সমস্ত দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।’’

Advertisement

এখানেই থামেননি সত্যরঞ্জন। তিনি জানান, মেঘনাদের স্ত্রী মহুয়া পাল শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে ব্যাঙ্কে কর্মী পদ থেকে ম্যানেজার পদে উন্নীত হয়েছিলেন। এবিষয়ে বর্তমান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আইনি পদক্ষেপ করেছে। তাঁর আমলে ব্যাঙ্কে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি সত্যরঞ্জনের। তাঁর কথায়, ‘‘২০০১ সাল থেকে ইন্টারেস্ট সাবসিডি পাওয়া যায়নি বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তার দায়ও তো ব্যাঙ্কের আগের চেয়ারম্যানদের। সেসময় শুভেন্দু অধিকারী তা জানতেন। মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি এবিষয়ে কী পদক্ষেপ করেছিলেন। এখন আমাদের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে রাজনীতি করছেন।’’

সত্যরঞ্জন সাহুর তোলা অভিযোগ অবশ্য মেঘনাদ পাল বলছেন, ‘‘আমি ব্যাঙ্কে চেয়ারম্যান থাকার সময়ে যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে বর্তমানে উনি (সত্যরঞ্জন সাহু) তো ক্ষমতায় রয়েছেন, তিনি তদন্ত করাননি কেন। ব্যাঙ্কের বর্তমান চেয়ারম্যানের আমলে বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতির প্রমাণ তো আমরা লিখিতভাবে দিয়েছি। উনি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির ডিরেক্টর হিসাবে চণ্ডীপুর শাখার ‘ইনচার্জ’ থাকার সময়ে ব্যাঙ্কের নিয়ম ভেঙে তিন ব্যবসায়ীকে কয়েক লক্ষ টাকা করে গৃহনির্মাণ ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। সেই টাকা আদায় হয়নি। তাঁর দায় উনি এড়াতে পারেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement