সৌমেন্দু, শুভেন্দু, শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারী।—ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রামের জেলায় তৃণমূলের বিধায়ক ১৩জন। সোমবার কলকাতায় খোদ দলনেত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলের নয়া জনসংযোগ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তার মধ্যে ১২জনই হাজির ছিলেন। ছিলেন না শুধু নন্দীগ্রামের বিধায়কই।
শাসকদলের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তথা পূর্ব মেদিনীপুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীই শুধু নন, শিশির, দিব্যেন্দু, সৌমেন্দু— অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্যকেই দেখা যায়নি নেতাজি ইন্ডোরের ওই অনুষ্ঠানে। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভায় অবশ্য শুভেন্দু হাজির ছিলেন। যদিও তাতে তাঁর সোমবারের অনুষ্ঠানের গরহাজিরার কারণ খোঁজা নিয়ে জল্পনায় দাঁড়ি পড়েনি।
পূর্ব মেদিনীপুর থেকে সোমবারের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত, পুরসভা ও দলের বিভিন্ন পদে থাকা দলের সাতশোরও বেশি নেতা-কর্মী। কাঁথির সাংসদ শিশির ও তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু দিল্লিতে লোকসভার অধিবেশনে যাওয়ায় নেত্রীর সভায় যেতে পারেননি বলে জানিয়েছিলেন। আর কাঁথির পুরপ্রধান সৌমেন্দু জানিয়েছিলেন অসুস্থতার কথা। কিন্তু সভার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও শুভেন্দুর অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা না পাওয়ায় নানা দলের অন্দরেই নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, কলকাতার সভায় যোগ দেওয়ার জন্য জেলায় তৃণমূলের ১৩জন বিধায়ক-সহ অন্য পদাধিকারীদের আমন্ত্রণপত্র বিতরণের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত জেলার আরও এক বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি। অর্ধেন্দু ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে জেলা কো-অর্ডিনেটর। নেতাজি ইন্ডোরের সভার আমন্ত্রণপত্র বিলির জন্য বাজকুল কলেজে যে সভা ডাকা হয়েছিল, সেখানে অর্ধেন্দু নিজে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শিশিরবাবু ও দিব্যেন্দুবাবু সংসদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ায় সভায় থাকতে পারেনি। আর শুভেন্দুবাবু দলীয় কাজে রবিবার মুর্শিদাবাদে ও সোমবার মালদহে ছিলেন। সেখানে ব্যস্ত থাকায় কলকাতায় সভায় হাজির থাকতে পারেননি।’’
এই ব্যাখ্যায় অবশ্য জল্পনা থামছে না। উল্টে অনুগামীদের একাংশ ফেসবুকে শুভেন্দুকে দলের রাজ্য সভাপতি পদে বসানোর দাবি করেছেন। তা নিয়েও জেলার রাজনৈতিক মহলে চলছে গুঞ্জন। দলের একাংশের মতে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একটা অংশের সঙ্গে শুভেন্দুর দূরত্বের জেরেই সম্ভবত কলকাতার সভায় তাঁকে দেখা যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে অধিকারীদের জেলায় পুরভোটের রণকৌশল কী ভাবে চূড়ান্ত হবে, কারা প্রার্থী হবেন— তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে শাসকদলের অন্দরে। কাঁথি, তমলুক এবং এগরা পুরসভার প্রার্থী তালিকা ও ভোটের রণকৌশল নিয়ে সে ভাবে আলোচনাও শুরু হয়নি। কারা প্রার্থী হবেন, ভোটের প্রচার ও দেওয়াল লিখন সংক্রান্ত কোনও কিছু নিয়েই আলোচনা হয়নি।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের ধারণা, পরিবহণ মন্ত্রী জেলায় ফিরলেই কাঁথির পুরনির্বাচনে প্রার্থী এবং ভোট প্রস্তুতির রূপরেখা চূড়ান্ত করবেন। কাঁথি শহর তৃণমূল সভাপতি সিদ্ধার্থ মাইতি বলেন, ‘‘পুরভোটের জন্য সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে অনেক আগে। তবে প্রার্থী এবং প্রচারে কৌশল সংক্রান্ত বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন শুভেন্দুবাবু। আমরা এখন তাঁর অপেক্ষায় রয়েছি।’’