Shantanu Thakur

শান্তিকুঞ্জে মন্ত্রী শান্তনু, রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে

সম্প্রতি সন্দেশখালিতে ইডি-র অফিসারদের উপর হামলার পরে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠিও লিখেছিলেন দিব্যেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৫
Share:

শান্তিকুঞ্জে শান্তনু ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র।

কাঁথিতে এসেছিলেন দলীয় কর্মসূচিতে। তারই ফাঁকে রবিবার শান্তিকুঞ্জে ঘুরে গেলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। লোকসভা ভোটের মুখে ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার এক সদস্যের শান্তিকুঞ্জে আগমনের ফলে বাড়ির দুই সদস্য শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা আরও বেড়ে গেল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তার পর তৃণমূলে থাকলেও প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারীকে একাধিক বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। দলে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তৃণমূলে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। তবে তৃণমূলে নিষ্ক্রিয় থাকলেও বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে সরাসরি দেখা যায়নি তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। যদিও লোকসভা ভোটের আগে দিব্যেন্দু বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি।

সম্প্রতি সন্দেশখালিতে ইডি-র অফিসারদের উপর হামলার পরে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে রাজ্যপালকে চিঠিও লিখেছিলেন দিব্যেন্দু। রবিবার শান্তনু ঠাকুর শান্তিকুঞ্জ থেকে বিদায় নেওয়ার পর দিব্যেন্দু সাংবাদিকদের জানান, সোমবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বসু তাঁকে আর শিশির আধিকারীকে রাজভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিকেল ৪টের সময় তাঁদের যাওয়ার কথা। এটি পুরোপুরি ‘ সৌজন্যমূলক’ সাক্ষাৎ বলে দিব্যেন্দু দাবি করলেও এতে তাঁর ও শিশির অধিকারীর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে।

Advertisement

এই রকম আবহে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের শান্তিকুঞ্জ গমনকেও ইঙ্গিত পূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও দিব্যেন্দুকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এ দিন বলছেন,"তৃণমূলের দয়ায় তমলুকের সাংসদ হয়েছিলেন। একেবারে নির্লজ্জ না হলে কেউ এ রকম কাজ করতে পারেন না।"রবিবার দুপুরে শান্তি কুঞ্জে মধ্যাহ্নভোজ সারেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। এর ঘণ্টাখানেক বাদে সেখান থেকে বেরিয়ে যান তিনি। শান্তনুকে ছাড়তে এসেছিলেন সৌমেন্দু আর দিব্যেন্দু। গাড়িতে ওঠার সময় দিব্যেন্দুকে আমন্ত্রণ জানিয়ে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। সংবাদ মাধ্যমকে বলেন,"শিশিরবাবু শ্রদ্ধেয় মানুষ। দীর্ঘদিনের পুরনো রাজনীতিবিদ। তা ছাড়া দিব্যেন্দুদাও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এ দিকে এলে তাঁর বাড়িতে আসার জন্য। ওদের পরিবারের আতিথেয়তা খুব ভাল।’’

শুভেন্দু এ দিন ছিলেন না। শান্তনু সেই প্রসঙ্গে বলেন,"দাদার সঙ্গে রোজ দেখা হয়। কথাবার্তাও হয়। উনি কাজে অন্য জায়গায় ব্যস্ত রয়েছেন।’’ কথাপ্রসঙ্গে রেশন দুর্নীতির কথা ওঠে। কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী বলেন,"জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যত জন সহযোগী ছিলেন তাঁরা সকলেই ধরা পড়বেন।"বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথা হয়েছে জানতে চাওয়া হলে দিব্যেন্দু বলছেন,‘‘রাজনীতির লোক আরেক জন রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে এলে রাজনীতির কথা হবে, এটা তো স্বাভাবিক। আমার সঙ্গেও স্বল্প কথা হয়েছে। হলদিয়া বন্দর নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হলদিয়ায় আসতে পারেন বলে একটা খবর রয়েছে। আজ আমি জাহাজ প্রতিমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি, হলদিয়া বন্দরকে যাতে সতীশ চন্দ্র সামন্তের নামে উৎসর্গ করা যায়।’’

সম্প্রতি সাংসদ শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে তাঁকে ‘গুরুদেব’ বলে শাস্তির মুখে পড়েছেন তৃণমূল পরিচালিত কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল মান্না। এ বার বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁরও কি শাস্তির কোপে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে? দিব্যেন্দু উত্তর দেন, "কেন শাস্তি দিচ্ছে না? যে কোনও রাজনৈতিক দলেরই তো ক্ষমতা আছে শাস্তি দেওয়ার। এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে গাড়িতে তুলতে এলে কেউ যদি তাতে প্যাঁচ খোঁজে তা হলে সেটা অশুভ লক্ষণ।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement