প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এ বার জল্পনা, জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেলেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন আনিসুর রহমান।
পূর্ব মেদিনীপুরে আনিসুর গোষ্ঠীর সঙ্গে শুভেন্দু-অনুগামীদের সম্পর্ক কোনও দিনও ভাল ছিল না। তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর বিজেপিতে যান আনিসুর। সম্প্রতি ‘বাংলার গর্ব মমতা’-র ফেসবুক পেজে জেলবন্দি বিজেপি নেতা আনিসুরের ছবি পোস্ট ঘিরেও জল্পনা ছড়িয়েছে, যা তাঁর তৃণমূল-যোগের ইঙ্গিত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এই আবহেই আনিসুর মেদিনীপুর জেলে ‘দাদাগিরি’ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে এখন তিনি মেদিনীপুর জেলে বন্দি। জেলের এক সূত্রে খবর, মাস খানেক ধরেই জেলে ‘লাফালাফি’ শুরু করেছেন আনিসুর। নিয়মশৃঙ্খলা না- মেনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। এক কারারক্ষীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। ওই কর্মী আনিসুরের ওয়ার্ড থেকে মোবাইল-চার্জার উদ্ধার করেছিলেন। আনিসুরের হুমকিতে সন্ত্রস্ত ওই কারারক্ষী ও তাঁর পরিবার। জানা যাচ্ছে, ঘটনার বিবরণ দিয়ে ওই কারারক্ষী জেল সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আনিসুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে মেদিনীপুর জেল থেকে বদলি করে দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন। অবশ্য কোনও এক অজ্ঞাতকারণে ওই ঘটনায় এখনও তেমন কোনও পদক্ষেপ করেননি জেল- কর্তৃপক্ষ। বরং আনিসুরকেই ওয়ার্ড থেকে জেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে তিনি আরও ‘স্বচ্ছন্দে’ রয়েছেন। এক কারারক্ষীর ক্ষোভ, ‘‘আমাদের এক সহকর্মীকে হুমকি দিল এক জেলবন্দি। অথচ, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না। অদ্ভুত!’’
জানা যাচ্ছে, শেখ মনসুর হাবিব নামে ওই কারারক্ষীই আনিসুরের বিরুদ্ধে জেল সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। মনসুর বছর চারেক ধরে জেলে কর্মরত। তিনি আনিসুরের ওয়ার্ডে মোবাইল- চার্জার পেয়ে জেল- কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন। অভিযোগ, এরপরই আনিসুর ও তাঁর দলবল মনসুরের উপরে চড়াও হয়। অভিযোগপত্রে মনসুর জানিয়েছেন, আনিসুর তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ইউনিফর্ম ধরে টানাটানি করেছেন। প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, জেলার মোবাইল চাইলেও আনিসুর বলেছেন, ‘আমি মোবাইল দেব না। আপনাদের কী করার আছে করে নিন।’ পরে অবশ্য ওই মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ঘটনা নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে নারাজ। মনসুর শুধু বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছে। যা জানানোর জেল- কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমি এখন আর কিছু বলব না।’’ আনিসুরের ‘দাদাগিরি’ সংক্রান্ত প্রশ্ন শুনেই ফোন কেটে দিয়েছেন জেল সুপার সুদীপ বসু। তবে অন্য এক জেলকর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও জানেন। তাঁরা যেমন নির্দেশ দেবেন, তেমন পদক্ষেপ করা হবে।’’