সবুজ নয়, এমনি বাজির চলছে কেনাকাটা। নিজস্ব চিত্র।
বাজির ধোঁয়া হয়, সবুজ বাজি কী, কবে-কীভাবে মিলবে বাজারে— সেই ধোঁয়াশাতেই জেরবার আম জনতা থেকে পুলিশ প্রশাসন!
পরিবেশ বান্ধব সবুজ (গ্রিম) বাজি পোড়ানোয় সায় দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট। কিন্তু সবুজ বাজি কী, তা-ই বুঝতে পারছে না আমজনতা-ব্যবসায়ীদের একাংশ। দোকানে সবুজ বাজি থাকলেও, সেগুলি চিনতে পারা যাবে কীভাবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পরিবেশ ও শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করা তমলুকের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি মানবেন্দু রায় বলেন, ‘‘সোমবার বাজারে সবুজ বাজির খোঁজ করছিলাম। কিন্তু কোথাও পাইনি।’’
অন্যদিকে, কোনগুলি সবুজ বাজির আওতায় পড়বে, তা নিয়ে পুলিশের কাছে কোনও নির্দেশিকাও আসেনি বলে খবর। ফলে পুলিশের অভিযানে আপাতত শব্দবাজিই বেশি বাজেয়াপ্ত করছে।
সবুজ বাজি চেনার উপায় কী?
জানা যাচ্ছে, সরকারিভাবে অনুমতিপ্রাপ্ত বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থার তৈরি বাজির প্যাকেটে ‘গ্রিন ক্র্যাকার’ কিংবা ফায়ারওয়ার্কস’ উল্লেখ করা থাকবে। থাকবে একটি ‘কিউ আর’ কোড থাকবে। ওই কিউআর কোড স্ক্যান করে যাচাই করা যাবে, সেটির দূষণের মাত্রা কত, সেটি আদৌ সবুজ বাজির কি না।
কিন্তু ওই সবুজ বাজি জেলার বাজারে এসেছে কি না, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এ রাজ্যের কোন কোন প্রস্তুতকারক সংস্থা সবুজ বাজি বানাচ্ছে, সেই তালিকা তাদের হাতে আসেনি। আর ভিন্ রাজ্য থেকে কেউ সবুজ বাজি এই জেলায় নিয়ে এসেছে বলেও কোনও ব্যবসায়ী এখনও জানাননি।
এ দিকে, গত কয়েক বছরের মত এবারও কালীপুজোর আগে থেকেই বেআইনি বাজি তৈরি ও বেচাকেনা রুখতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। সোমবারও তমলুক মহকুমার প্রতিটি থানা এলাকায় বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণ বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। কিন্তু তার অধিকাংশই শব্দবাজি। অভিযান চালানোর সময় একটি দোকানেও সবুজ বাজি মেলেনি জানিয়েছে পুলিশ।
জেলার দোকানে দোকানে প্রকাশ্যে ফুলঝুরি, রংমশাল, তুবড়ি-সহ নানা আতস বাজির পসরা দেখা যাচ্ছে। কোনওটিতেই সবুজ বাজির ‘লোগো’ বা কিউআর কোড নেই। সবুজ বাজি রয়েছে কি না খোঁজ করতে এক ব্যবসায়ী বিস্ময়ের সুরে বলেনেন, ‘‘সে আবার কী জিনিস!’’