ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
নির্বাচনী সভায় তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমের পতাকা ধরলেন বেশ কয়েকজন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য-সহ শতাধিক মানুষ।
সোমবার সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নির্বাচনী সভা ছিল দাঁতন ২ ব্লকের সাবড়া পঞ্চায়েতের দোস্তনীয়া এলাকায়। সেখানেই সাবড়া পঞ্চায়েতের গতবারের বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান দিপালী ঘোড়াই-সহ পাঁচজন পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের মীনাক্ষী ও জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ হাত ধরে সিপিএমে যোগ দেন। যাঁর নেতৃত্বে ছিলেন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ইফতেকার আলির একসময়ের ঘনিষ্ঠ বসির খান, পঞ্চায়েত সদস্য আসগর আলিরা। বসির বলেন, ‘‘সম্মান পেলাম না। টিকিটও পাইনি। নির্দলে দাঁড়াতে দেবে না। কংগ্রেসের কোনও নেতৃত্ব পেলাম না। বিজেপিতে তো যেতে পারব না। তাই সিপিএমে এলাম।’’ যদিও তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে সিপিএমের হয়ে আগেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন বসির। সাবড়া পঞ্চায়েতের ৯ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে সিপিএম থেকে এ বারে ভোটে লড়ছেন। যে আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ব্লক সভাপতি ইফতেকার আলি। ফলে এ বারে একসময়ের দুই ঘনিষ্ঠ সম্মুখ সমরে। বসির বলেন, ‘‘জনগণ কাকে বেছে নেন দেখা যাক।’’
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাবড়া পঞ্চায়েত দখল করেছিল নির্দল। তৃণমূলের সঙ্গে বনিবনা তেমন না হওয়ায় বসির ও ইফতেকারেরা নির্দলে লড়াই করে পঞ্চায়েত দখল করেছিলেন। পরে অবশ্য জোড়াফুলের পতাকা ধরেন। তবে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বসিরের সঙ্গে ইফতেকারের ধীরে ধীরে নানা বিষয়ে দূরত্ব বাড়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্লক সভাপতির পদ পান ইফতেকার। এ দিন দলবদলের পর বসির বলেন, ‘‘সকলকে নিয়ে চলল না। কষ্ট হয়েছে। একসঙ্গে ছিলাম। দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছি। সম্মানও পেলাম না।’’ যদিও তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। তৃণমূলের বক্তব্য, কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যের নামে নানা ধরনের অভিযোগ আছে। মামলাও আছে। এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে মানুষ সমর্থন করবেন! তাই টিকিট দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ইফতেকার আলি বলেন, ‘‘যত যাই হোক আমরা জিতব। মানুষ উন্নয়ন দেখবে। যারা তৃণমূলের নামে অভিযোগ আনছেন তারা ঠিক বলছেন না।’’
এ দিন বামফ্রন্টের একাধিক নির্বাচনী সভা ছিল। প্রথমে মোহনপুরে সভা হয়। বৃষ্টিতে ভিজেই বক্তৃতা করেন নেতৃত্বরা। মীনাক্ষী মোহনপুরে কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভোট লুট করবে। সরকার, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ যদি দায়িত্ব নিতে না পারে। তার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। কাজ প্রচুর। জিততে হবে আমাদের। জনগণের পঞ্চায়েত গড়তে হবে।’’ মোহনপুরের পর দাঁতন ২ ব্লকের সাবড়াতে ছিল সিপিএমের সভা। সেখানেই তৃণমূল থেকে সিপিএমে এসেছেন শতাধিক কর্মী সমর্থক। নারায়ণগড়ের খাকুড়দা ও চাতুরিভাড়াতেও সভা করেছে সিপিএম। এতদিন মোট চারটি নির্বাচনী সভা ছিল মীনিক্ষির। চারটি সভাই ছিল বৃষ্টি বিঘ্নিত। তবুও বৃষ্টিতে ভিজেই সভাগুলি করেছে সিপিএম।