ছাত্রছাত্রীদের তৈরি বীজ কলম। নিজস্ব চিত্র
প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে কলমকেই হাতিয়ার করল হলদিয়া পৌর পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীরা।
শিল্প-বন্দর শহর হলদিয়ায় দূষণে যখন জেরবার নাগরিকেরা তখন পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন শিল্প সংস্থার প্রতিনিধি থেকে পরিবেশকর্মীরা । বুধবাক বিদ্যালয়ে হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের উদ্যোগে ফলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সঙ্গে এই ‘বীজ কলম’-এর উদ্বোধন করা হয়। নবম শ্রেণির সায়ন্তনী সাহু, সারণী পড়্যা, নীতিশ্রী বেরা, মেহেন্দি খাতুনরা এ দিন শতাধিক বীজ কলম তৈরি করে বিলি করল অন্য ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকদের।
কী এই বীজ কলম? ওই পড়ুয়ারা জানায়, প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলছেই। এখন যে ধরনের কলম তারা ব্যবহার করে তাতে কালি শেষ হয়ে গেলে তা ফেলে দেওয়া হয়। ফেলে দেওয়া সেই কলমের মধ্যে থেকেই তারা জীবন সৃষ্টি করতে চায়। নীতিশ্রীর কথায়, ‘‘খবরের কাগজ আর রিফিল দিয়ে তৈরি এই বীজ কলমের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের বীজ। যেমন অপরাজিতা, ভুট্টা, পালং শাক, দোপাটি, লাউ, টগর সহ নানা রকম শাকের বীজ। কলমের শেষের দিকে একাধিক বীজ দিয়ে কলমের আকার তৈরি করা হয়েছে। স্বাভাবিক কলমের মতোই শক্তপোক্ত এই কলমের গায়ে নিজেরাই তুলি, রং দিয়ে এঁকেছি আমরা।’’ ছাত্রছাত্রীরা জানায়, ব্যবহার করার পর এই কলম ফেলে দিলে কলম থেকেই নতুন চারা জন্ম নেবে। আর এক ছাত্রী ঋত্বিকা বড়ালের কথায়, ‘‘আমরা যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলে সমস্যা তৈরি করছি। কিন্তু ফেলে দেওয়া জিনিসেও যে সৃষ্টি করা যায়, সেটাই আমরা দেখাতে চেয়েছি। আর তাই এই উদ্যোগ।’’ কর্মসূচিতে উপস্থিত হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের তরফে সোমনাথ দত্ত, বিদুষ সেন বলেন, ‘‘ছেলে মেয়েদের এই উদ্যোগ যে নতুন ধরনের চেতনা তৈরি করবে তার সুফল মিলবে ভবিষ্যতে।’’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘এমন নতুন ভাবনার শরিক হতে পেরে ভাল লাগছে। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এই উদ্যোগ অভিনব।’’
শিক্ষিকা নিবেদিতা ভৌমিক বলেন, ‘‘সম্ভবত রাজ্যে কোনও স্কুলে এই ধরনের কলম ব্যবহারের উদ্যোগ এই প্রথম। সবুজ বাঁচানোয় যা অন্যকে সচেতন করবে।’’ অনুষ্ঠানে ছিলেন পুর পারিষদ (শিক্ষা) জয়ন্তী রায়, প্রধান শিক্ষক শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র প্রমুখ।