মহিষাদলের একটি প্রাথমিক স্কুলে টিকাকরণ। নিজস্ব চিত্র
হাম ও রুবেলার প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচির প্রথম দিনেই শিবিরে ভিড় জমল স্কুল পড়ুয়াদের। সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমস্ত ব্লকের বিভিন্ন প্রাথমিক ও হাইস্কুলে প্রতিষেধক দেওয়ার শিবির আয়োজন করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। প্রায় সমস্ত শিবিরে শিশু এবং অভিভাবকদের উপস্থিতি ছিল বেশ ভাল। কোথাও কোথাও টিকা নেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সমস্ত শিশুকে হাম, রুবেলা প্রতিষেধক দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ৯ জানুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলাজুড়ে টিকার শিবির হবে। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় প্রায় ৭ লক্ষ ৮৯ হাজার ও নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় প্রায় চার লক্ষ ৪৭ হাজার মিলিয়ে জেলায় মোট প্রায় ১২ লক্ষ ৩৬ হাজার শিশুদের হাম ও রুবেলার প্রতিষেধক দেওয়া হবে। সমস্ত সরকারি প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, বেসরকারি স্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হাসপাতালে প্রতিষেধক দেওয়ার শিবির হবে।
এদিন তমলুক শহরের বাড়পদুমবসান সুকান্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়, রত্নালী আদর্শ বালিকা বিদ্যাপীঠ ও একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রতিষেধক বা টিকার শিবির করে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রত্নালী আদর্শ বালিকা বিদ্যাপীঠে ৪৮৪ জন পড়ুয়াকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এদিন ৪০২ জন পড়ুয়া শিবিরে টিকা নিয়েছে। প্রথম দিনে টিকার শিবিরে উপস্থিতির হার ভাল। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের একাংশ এদিন টিকার শিবিরে আসেনি। এদিন ওই স্কুলে টিকার শিবিরের উদ্বোধনে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শ্বেতা আগরওয়াল, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় প্রমুখ।
একইভাবে বাড়পদুমবসান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিকার শিবিরে ৭৯ জন পড়ুয়ায়কে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। শিবিরে ৬২ জন পড়ুয়া টিকা নিয়েছেন। বেসরকারি স্কুলটিতে ৯৮ জন পড়ুয়াকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এদিন ৮৮ জন পড়ুয়া টিকা নিয়েছেন। তমলুক পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের নোডাল অফিসার মোস্তাফা বলেন, ‘‘প্রথম দিনে শিবিরে খুব ভাল সাড়া মিলেছে। শিবিরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অধিকাংশ পড়ুয়া টিকা নিয়েছে। পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে অল্প সংখ্যক পড়ুয়া অনুপস্থিত ছিল।’’ নন্দকুমার ব্লকের বিভিন্ন স্কুলেও শিবিরে হাম ও রুবেলা টিকার শিবিরে পড়ুয়াদের ভিড় জমতে দেখা গিয়েছে। নন্দকুমার ব্লকের হরিপুর আদর্শ প্রাথমিক স্কুলেও এদিন টিকার শিবির হয়েছিল। এখানে টিকার শিবিরে ওই স্কুলের ১৪১ জন পড়ুয়া ছাড়া পাশের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৬৪ শিশু মিলিয়ে ২০৫ জনকে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, ‘‘হাম ও রুবেলা টিকা দেওয়ার প্রথম দিনের শিবিরে ভাল সাড়া মিলেছে। এদিন ৩০৯ টি শিবির হয়েছিল।’’
এদিন কাঁথি পুরসভায় এলাকায় টিকাকরণ শিবিরের উদ্বোধন করেন পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় এ দিন ৮০ শতাংশেরও বেশি পড়ুয়াদের হাম এবং রুবেলা টিকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ কুমার মৃধা বলেন, ‘‘প্রথম দিন গোটা স্বাস্থ্য জেলা জুড়ে নির্বিঘ্নে রুবেলা এবং হামের টিকাকরণ কর্মসূচি মিটেছে। প্রতিটি শিবিরে ৮০ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। আপাতত সব ব্লক এবং পুরসভায় এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে।’’