ফাইল চিত্র।
ফাঁকা স্টেশন। হাতে গোনা কয়েকটি বিশেষ ট্রেন ছাড়া যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ। ফলে, রেলকেন্দ্রিক অপরাধও কমেছে। ব্যস্ততা কমেছে রেল পুলিশের।
খড়্গপুর রেল পুলিশ (জিআরপি) জেলার পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েকমাসে এই পুলিশ জেলায় অপরাধের ঘটনা নেই বললেই চলে। কমেছে অপমৃত্যুও। আগে যেখানে মাসে ২৫-৩০টি অপরাধমূলক মামলা হত এখন সেখানে সংখ্যাটি একটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাও মাসে ৩৫টি থেকে ৬-৭টিতে নেমেছে।
আনলক পর্ব শুরুর পরে রাজ্য পুলিশের অন্য শাখায় মামলা বাড়তে থাকায় ব্যস্ততা চরমে। অথচ রাজ্য পুলিশের অধীনে থাকা রেল পুলিশের শাখায় একেবারে বিপরীত ছবি। মামলা কমে যাওয়ায় চাপও কমেছে রেল পুলিশের। খড়্গপুর রেল পুলিশ জেলার অধীনে থাকা খড়্গপুর, শালিমার, পাঁশকুড়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দিঘার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনেও কোনও ব্যস্ততা নেই। কাজ কম থাকায় দিনের বেশিরভাগ সময় অফিসে বসেই কাটছে রেল পুলিশের কর্মীদের। রেল ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার অপেক্ষায় তাঁরা।
এখন দিনে এক-দু’টি বিশেষ যাত্রিবাহী ট্রেন ছাড়া কোনও মেল, এক্সপ্রেস, লোকাল ট্রেন চলছে না। এর জেরেই গত ২৩ মার্চের আগে চুরি, ছিনতাই, মারধর, পাচার, শ্লীলতাহানির মতো নানা অভিযোগে যেমন হিমশিম খেতে হত রেল পুলিশকে, সেই চাপ আর নেই। কমেছে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু। শুধুমাত্র কয়েকটি মালগাড়ি ও বিশেষ যাত্রিবাহী ট্রেনে আরপিএফের সঙ্গেই নজরদারি চালাতে হচ্ছে রেল পুলিশকে। খড়্গপুর রেল পুলিশ থানার এক সাব-ইন্সপেক্টর বলেন, “সত্যি বলতে অপরাধ কম থাকুক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু এত বছর ধরে যে ব্যস্ততা তা কয়েক মাস ধরে কম থাকায় খারাপ লাগছে। এমন পরিস্থিতি কেউ চায় না। সব স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসুক সেটাই এখন কাম্য।”
লকডাউনের গোড়ায় কয়েকটি বিশেষ ট্রেনে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু থেকে যাত্রীদের ফেরানো হচ্ছিল। তখনও রাজ্য পুলিশের অন্য শাখার সঙ্গে রেল পুলিশও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছিল। স্টেশনের বাইরে থাকা অসহায় মানুষদের খাবারের বন্দোবস্ত করছিল রেল পুলিশ। তবে আনলক শুরু হতে গত এক মাসে সেই কাজও অনেকটাই কমেছে। অবশ্য বিষয়টিকে অন্য চোখে দেখছেন রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায়। তিনি বলেন, “মামলার সংখ্যা কমেছে এটা ঠিক। কিন্তু এর একটি অন্য কারণও রয়েছে। ট্রেন কম চলায় আমরা যে ক’টি বিশেষ ট্রেন চলছে তাতে বাড়তি নজরদারি চালাতে পারছি। তাতেও কিছুটা অপরাধ প্রবণতা কমেছে।”
কিন্তু আগের তুলনায় ট্রেন কম চলাচলের জন্য যে চাপ অনেকটাই কমেছে তা মানছেন সকলেই। রেল পুলিশ সুপার অবদেশ পাঠকও বলেন, “ট্রেন কম চলায় স্বাভাবিকভাবে অপরাধ কম হচ্ছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলাও কম হচ্ছে। তবে বিশেষ যে ট্রেনগুলি চলাচল করছে তার জন্য আমাদের নজরদারি চলছেই।”