তমলুকের একটি বাজারে। রবিবার
লাগামছাড়া আলুর দাম। পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের আনাজ বাজারে আলু বিকোচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি। দাম নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপের কথা শোনালেও বাজারে দেখা নেই টাস্ক ফোর্স-এর। এই পরিস্থিতিতে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রেতারা।
সাধারণত প্রতি বছর ভাদ্র মাসে হিমঘর থেকে মজুত আলু বের করে দেওয়া হয়। ফলে বছরের এই সময় আলুর দাম কমে। কিন্তু এ বার উল্টো চিত্র। হিমঘর থেকে আলু বেরোলেও বাজারে ঊর্ধ্বমুখী আলুর দাম। দাম এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তা হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত। জেলার আনাজ বাজারগুলিতে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা প্রতি কিলো। চন্দ্রমুখীর দাম ৩২ থেকে ৩৫ টাকা প্রতি কিলো। সাধারণত জোগানে ঘাটতি থাকলে দাম বাড়ে। কিন্তু জেলার আনাজ বাজারগুলিতে কোথাও আলুর জোগানে ঘাটতি নেই বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তা হলে এই মূল্যবৃদ্ধি কেন? ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের একাংশের দাবি এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারি করে বাজারে তাৎক্ষণিক কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করছে। মূল্য বৃদ্ধি সেই কারণেই।
পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে ও কোলাঘাট আনাজ বাজারে রবিবার জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা কিলোদরে। শুধু আলু নয়। বাজার আগুন দাম আনাজেরও। পটল ৬০-৭০ টাকা, টম্যাটো ৮০ -১০০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, কুঁদরি ৫০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা প্রতি কিলো। বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি সত্ত্বেও বাজারে টাস্কফোর্সের দেখা নেই বলে অভিযোগ। পাঁশকুড়া শহরের বাসিন্দা কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘করোনা কালে মানুষের হাতে টাকা নেই। তার ওপর এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা কথা বললেও টাস্কফোর্সের দেখা নেই। এ ভাবে চললে মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।’’
প্রতিটি ব্লকে বিডিও হলেন টাস্কফোর্সের প্রধান। কয়েকদিন আগে কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল করোনায় আক্রান্ত হন। আইসোলেশনে থাকা বিডিও বলেন, ‘‘আমি নিজে আইসোলেশনে থাকার জন্য টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু করা যায়নি। আশা করছি দু’তিন দিনের মধ্যে অভিযান শুরু হবে’’ পাঁশকুড়ার বিডিও ধেনদুপ ভুটিয়া বলেন, ‘‘টাস্কফোর্সের অভিযানের জন্য এগ্রি মার্কেটিং দফতর থেকে এখনও নির্দেশ আসেনি।’’ তমলুকের মহকুমা শাসক কৌশিকব্রত সেন বলেন, ‘‘যে সব ব্লকে এখনও টাস্কফোর্সের অভিযান শুরু হয়নি সেখানকার বিডিওদের বাজার পরিদর্শনের জন্য বলা হবে।’’
রবিবার কাঁথি সুপার মার্কেটে জ্যোতি আলু বিকিয়েছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। চন্দ্রমুখী ৪০ টাকায়। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, বাজারে পুরসভা কিংবা প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই। এগরার পাইকারি থেকে খুচরো বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে তিরিশ টাকার উপরে। আনাজের দাম বেশ চড়া। অভিযোগ মহকুমার বাজারগুলিতে নজরদারি না থাকায় দিন দিন মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে আনাজ থেকে আলুর। নজরদারির অভাবে ফায়দা তুলছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এগরার পুর প্রশাসক শঙ্কর বেরা বলেন, ‘‘আগামী দু -এক দিনের মধ্যে বাজারে অভিযান শুরু হবে।’’