আলু খেত থেকে জমা জল বের করছেন এক চাষি। গড়বেতায়। নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের জেরে অসময়ে বৃষ্টি। ঘাটাল, গড়বেতা-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষের জমিতে বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। সদ্য লাগানো আলু এবং মাঠে কেটে রাখা পাকা ধানে সেই জল গিয়ে মিশছে। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত পশ্চিম মেদিনীপুরের চাষিদের। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে এই জেলার কৃষি দফতরও।
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি জানান, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। কোথাও কোনও সতর্কতা জারি নেই। তবে নজরদারি রাখা হয়েছে।
মাঠ থেকে ধান না ওঠায় এবার এমনিতেই দেরিতে শুরু হয়েছিল আলু চাষ। এই ক’দিনে গোটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ঘাটাল মহকুমায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু লাগানো হয়ে গিয়েছে। এবার গোটা জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা ৭৪ হাজার হেক্টর। এখন তাই আলু চাষের জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি চলছিল জেলা জুড়েই। আচমকা বৃষ্টি চাষিদের সব প্রস্তুতি ওলোট-পালোট করে দিল।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এবার এমনিতেই জেলায় জলদি জাতের আলু চাষ তেমন হয়নি। তারপর মরসুম শুরু হতেই নিম্নচাপে আলু চাষ অনেকটাই পিছিয়ে গেল। সাধারণত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আলু লাগানোর সময়। ফলে ধান কাটার পরই দিনরাত এক করে চাষিরা জমিগুলিকে আলু চাষের উপযুক্ত করে তুলছিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “জেলায় ৭৪ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। জোরকদমে শুরু হয়েছিল আলু চাষ। অকাল বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ফের সব পিছিয়ে যাবে। জমিতে জল দাঁড়িয়ে গেলে কিছুটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।”জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গড়বেতার তিনটি ব্লকে ৬০ মিলিমিটারের উপরে বৃষ্টি হয়েছে। যাঁরা সদ্য আলু বীজ জমিতে রোপণ করেছেন এই বৃষ্টিতে তাঁদের চাষে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় গড়বেতা, চন্দ্রকোনা রোডের অনেক চাষি আলু লাগানো বন্ধ করে দিয়েছেন। গড়বেতা ১ ব্লক কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্লকে ১৫ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আলু চাষ হয়। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে আলু লাগানো হয়ে গিয়েছিল। বিঘার পর বিঘা আলু খেত এখন জলের তলায়। আবহাওয়া প্রতিকূল দেখে অনেক চাষিই আলু লাগানো বন্ধ করে দিয়েছেন।