প্রতীকী ছবি।
মাঝে ব্যবধান সপ্তাহ দেড়েকের। ফের পুরনো থানায় ফিরলেন দুই ওসি। একজন তো বিদায় সংবর্ধনা নেওয়ার দু’দিনের মাথায় ফিরলেন পুরনো থানাতেই।
শুক্রবার রাতেই বদলির নির্দেশ জারি করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার। নির্দেশ ঘিরে জল্পনা চলছে জেলার বিভিন্ন মহলে। এত কম সময়ের মধ্যে ফের বদলির নির্দেশ কেন? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘এই নির্দেশের বিষয়টি পুলিশের অভ্যন্তরীণ।’’
চলতি মাসের গোড়ায় ৪ জন এসআই-এর বদলির নির্দেশ হয়েছিল। এর মধ্যে কেশপুর, খড়্গপুর গ্রামীণ এবং ডেবরা থানার ওসিরা ছিলেন। কেশপুর থানার ওসি ছিলেন বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে খড়্গপুর লোকাল থানার ওসি করা হয়েছিল। খড়্গপুর লোকাল থানার ওসি ছিলেন মহম্মদ আসিফ সানি। তাঁকে ডেবরা থানার ওসি করা হয়েছিল। নতুন নির্দেশে কেশপুরে ফিরে গিয়েছেন বিশ্বরঞ্জন। খড়্গপুরে লোকালে ফিরে গিয়েছেন আসিফ। আর ডেবরার ওসি করা হয়েছে সিদ্ধার্থ সাহাকে।
শুক্রবার রাতেই খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় ওসি পদে যোগ দিয়েছেন আসিফ সানি। আগে এই থানার ওসি ছিলেন বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক মাস আগে তাঁকে বদলি করে ওসি করা হয় গ্রামীণ থানারই সেকেন্ড অফিসার আসিফ সানিকে। কেশপুর থানার ওসি হন বিশ্বরঞ্জন। তবে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফের বিশ্বরঞ্জনকে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় ওসি হিসাবে বদলি করা হয়। একইসঙ্গে আসিফ সানিকে বদলি করা হয় ডেবরা থানায়। দু’জনেই নিজেদের নতুন দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে আসিফ সানিকে গ্রামীণ থানার পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। তার পরে ফের শুক্রবার রাতে আসিফ সানিকে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় ওসি পদে ফিরিয়ে এনে বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেশপুরে ওসি পদে পাঠানো হয়েছে।
গোটা ঘটনায় পুলিশ মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। কী কারণে দশদিনের মাথায় দু’বার ওসি বদল করে পুরনো ওসিদের ফেরানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের একটি অংশ বলছে, এর পিছনে উঁচু মহলের নানা সমীকরণ কাজ করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আসিফ সানি বদলের পরে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার একটি অংশ আতসবাজি জ্বালিয়েছিলেন। ওসি বদলে বিদায় সংবর্ধনার প্রথা না থাকলেও গত ১২ফেব্রুয়ারি রাতে আসিফ সানিকে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা, নৈশভোজের আয়োজনও করা হয়। এ সব পুলিশের উঁচু মহলের একটি অংশ ভাল ভাবে নেয়নি। জেলার এক সাব-ইন্সপেক্টর বলেন, “এটা হাস্যকর বিষয়। এ ভাবে বারবার বদলি করলে কাজেও সমস্যা হয়।”
বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ওসি-র দায়িত্ব নেওয়ার পরেই গত ৫ ফেব্রুয়ারি ওই থানা এলাকা থেকে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহের পাশে পড়েছিল মদের বোতল ও গ্লাস। ৭ ফেব্রুয়ারি আবার মাতকাতপুরে গুলি চালিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠে। ওই রাতেই ঘাঘরায় ফের এক ব্যক্তিকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাগুলির কিনারা হয়নি। এ সবের সঙ্গে বদলির যোগ রয়েছে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।