মৃত পুলিশ আধিকারিককে শেষ শ্রদ্ধা। নিজস্ব চিত্র
করোনা থাবা বসিয়েছে জেলার একের পর এক থানায়। সংক্রমিত হয়েছেন ডিআইজি, ওসি, থেকে করোনা-যোদ্ধা বহু পুলিশ কর্মী ও আধিকারিক। এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম করোনা-যোদ্ধা পুলিশ আধিকারিকের মৃত্যু হল করোনা সংক্রমণেই।
সবং থানার সাব-ইন্সপেক্টর অতনু প্রামাণিক(৩৮) মঙ্গলবার ভোরে মারা গিয়েছেন হাওড়ার হাসপাতালে। তিনি সবং থানার সেকেন্ড অফিসার ছিলেন। দিন পনেরো ধরেই করোনার গ্রাসে চলে গিয়েছিল সবং থানা। এখনও পর্যন্ত ওসি-সহ এই থানার প্রায় ২০জন পুলিশকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ওসি সুব্রত বিশ্বাস। তবে গত ৫ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসা অতনু করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানলেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে তিনি ভর্তি ছিলেন ডেবরার সেফ হোমে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় শালবনি কোভিড হাসপাতালে। সোমবার শারীরিক অবস্থা উদ্বেগজনক হওয়ায় ওই পুলিশকর্তাকে হাওড়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শে,রক্ষা হয়নি। ১৪ ঘন্টার লড়াই শেষে এ দিন সেখানেই মৃত্যু হয় করোনা-যোদ্ধা এই পুলিশ কর্তার। সবংয়ের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কান্ডার বলেন, “ভাবতে পারছি না থানার মেজবাবু আর নেই। করোনা পরিস্থিতিতে একসঙ্গে অনেক কাজ করেছিলাম। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”
এর আগেও করোনা কেড়ে নিয়েছে বহু করোনা-যোদ্ধার প্রাণ। জেলায় মৃত্যু হয়েছে এক চিকিৎসকের। কিন্তু করোনা-যোদ্ধা পুলিশকর্মীর মৃত্যু জেলায় এই প্রথম। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বাসিন্দা অতনু কর্মসূত্রে স্ত্রী ও তিন বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে সবংয়েই থাকতেন। করোনায় মৃত্যু হওয়ায় দেহ পরিবারকে দেওয়া হয়নি।
সহকর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ গিন প্রতিটি থানা ও পুলিশলাইনে অতনুর ছবিতে মাল্যদান করেন পুলিশকর্মীরা। অতনুর কর্মস্থল সবং থানায় তাঁর ছবির সামনেই গান স্যালুটে শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ, মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা প্রথম জেলায় আমাদের করোনা-যোদ্ধা এক সহকর্মীকে হারালাম। অতনুর
হাই সুগার ছিল। কিন্তু শত চেষ্টাতেও বাঁচানো গেল না। এটা আমাদের কাছে খুবই দুঃখজনক।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, সরকারি নিয়মে মৃত পুলিশ কর্তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে।