এই ঘরেই থাকত নাবালক। — নিজস্ব চিত্র।
চুরির অপবাদ দিয়ে নাবালককে প্রথমে গণধোলাই, তার পর মাথা ন্যাড়া করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল। ঘটনার পর দিন সেই নাবালকেরই দেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় তদন্তে নেমে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন শাসকদল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যও।
মায়ের মৃত্যু হয়েছে। বাবা পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বর্তমানে ওড়িশায় কাজ করছেন। দাদা পরমেশ্বর থাকেন নারায়ণগড়ে নিজের শ্বশুরবাড়িতে। ১৩ বছরের শুভ নায়েক একাই থাকত দাঁররা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বড়চাহারা গ্ৰামের বাড়িতে। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বড়চাহাড়া গ্ৰামের একটি বাড়ি থেকে একটি হাঁড়ি চুরি যায়। সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই নাবালকের উপর। অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শুভকে ডেকে ব্যাপক মারধর করা হয়। গণধোলাইয়ের পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বড়চাহারা বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে একটি সেলুনে শুভকে ন্যাড়া করে বাড়ি পাঠানো হয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, নিগ্রহের আর এই ঘটনার নেতৃত্ব দেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মনোরঞ্জন মাল। পর দিন বাড়ি থেকে শুভর দেহ উদ্ধার হয়। গ্রামবাসীদের অনুমান, শুভ অপমান সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করে। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামে ছুটে আসেন দাদা পরমেশ্বর। তিনি ভাইকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় সবং থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দাঁররা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মনোরঞ্জন-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করে। আদালত তৃণমূল নেতা-সহ মোট দু’জনকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এই ঘটনার পর অবশ্য নেতার পাশে দাঁড়ায়নি তৃণমূল। শাসকদলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। কোনও ছাড় নেই। দোষীদের কড়া শাস্তি হবে। দল কোনও ভাবেই অন্যায় বরদাস্ত করবে না। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’’