তালছিটকিনিতে এই অংশেই মেরামত হওয়া নদীবাঁধে ধস নামে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
কেলেঘাই নদীর ভাঙা বাঁধ মেরামতি নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এখনও মেরামতির কাজ শেষ হয়নি। তার আগেই ফের মেরামত করা বাঁধের একাংশ ধসে পড়ায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। যদিও সেচ দফতরের দাবি, বৃষ্টিতে ভরাট মাটি বসে যাওয়ায় এই বিপত্তি।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পটাশপুরে তালছিটকিনিতে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা কবলিত হয়েছিল পটাশপুর ও এগরা -সহ চণ্ডীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় তিন মাস জলবন্দি ছিলেন কয়েক লক্ষ মানুষ। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু মানুষ। প্লাবনের এক বছর পরেও তালছিটকিনিতে ভাঙা নদীবাঁধের ধারে বসবাসকারী একাধিক পরিবার স্কুল ও ক্লাবে রাত কাটাচ্ছেন। ঘর না থাকায় বাড়ি ফেরা হয়নি তাঁদের।
চলতি বছরের মে মাস থেকে ভাঙা নদীবাঁধ মেরামতি সহ বন্যায় ভেসে যাওয়া বাস্তজমি ভরাটের কাজ শুরু করে সেচ দফতর। যা নিয়ে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগে সরব স্থানীয়রা। বাঁধ মেরামতিতে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে একাধিকবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। সেচ দফতরের প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দে তালছিটকিনি এলাকায় ভাঙা নদীবাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। গত ১৪ জুলাই বাঁধ মেরামতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। জেলাশাসকের বাঁধ পরিদর্শনের ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় মঙ্গলবার মেরামত হওয়া একাংশে ফের ধস নেমেছে। এখনও কেলেঘাই নদী বর্ষার জলে ভর্তি হয়নি। তার আগে তালছিটকিনিতে মেরামত হওয়া বাঁধে ফের ধস নামায় এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার সংস্থা সঠিকভাবে মাটি এবং কাঠের বল্লা পোঁতার কাজ করেনি। সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়াররাও সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেনি। যার ফলে ব্যারিকেড দেওয়া কাঠের বল্লা অল্প বৃষ্টিতে আলগা হয়ে পড়ায় বাঁধের মাটি ধসে গিয়েছে।
যদিও সেচ দফতরের দাবি, বৃষ্টির কারণে ভরাট মাটি বসে যাওয়ায় এই বিপত্তি হয়েছে। এটা স্বাভাবিক নিয়ম। ফের কাঠের বল্লা পুঁতে ধসে যাওয়া অংশে মাটি ফেলে মেরামত করা হবে। সেচ দফতরের আশ্বাসের পরেও কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নদীবাঁধ মেরামতিতে প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
কাঁথি সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার শুভাশিস বেরা বলেন, ‘‘পদ্ধতি মেনে বাঁধ মেরামতির কাজ হচ্ছে। বর্ষার সময় ভরাট মাটি বসে যাওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যে অংশে মাটি বসে গিয়েছে সেখানে নতুন করে কাঠের বল্লা পুঁতে মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে। অযথা ভয়ের কোনও কারণ নেই।’’