চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ব্লকের এক কিশোরী। এ বার এলাকার নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পথ অবরোধ করলেন ডেবরার নাগরিকেরা!
মঙ্গলবার ডেবরার হরিহরপুরে পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। দীর্ঘক্ষণ গ্রামীণ সড়কের মোড়ে অবরোধ চলতে থাকে। গত রবিবার ব্লকের এক একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার হয়। রাস্তা থেকে পুকুরপাড়ের ঝোপে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় বাড়ির অদূরে পাওয়া যায় কিশোরীকে। এই ঘটনায় পুলিশ পাঁচজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ঘটনার পর মহিলাদের নিরাপত্তায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়েছে একাধিক সংগঠন। এ দিন পথে নামেন হরিহরপুরের গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, এলাকার প্রতিটি রাস্তায় নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। মদের আসরে নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে। গণধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। পরে ডুঁয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। দুপুরে বালিচক থেকে প্রতিবাদ মিছিল করে একই দাবিতে থানায় স্মারকলিপি জমা দেয় ডেবরা নাগরিকবিন্দ নামে একটি সংগঠন।
এ দিন সকালে শুরু হওয়া পথ অবরোধ ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওই অবরোধে প্রথমে শামিল হয়েছিলেন নির্যাতিতা কিশোরীর পরিজনেরা। তবে একসময়ে ওই পথ অবরোধে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। ক্ষিপ্ত জনতা জমে থাকা যানবাহনের মাঝে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে বাধা দেয় ওই কিশোরীর পরিজনেরা। ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। নির্যাতিতার কাকা বলেন, “আমাদের বাড়ির মেয়ের যারা এমন ক্ষতি করেছে তাদের এমন শাস্তি চাই যাতে মানুষ শিউরে ওঠে।’’ এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘রাস্তায় পুলিশের টহলদারি, নিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত আলো চাই। তাই আমরা প্রতিবাদকে সমর্থন করছি। কিন্তু পথ অবরোধ ঘিরে যখন ধ্বংসাত্মক প্রতিবাদ চলেছে তাকে আমরা সমর্থন না জানিয়ে চলে এসেছি।” ওই ঘটনার পরে অবশ্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে কিশোরীর পরিবারের সদস্যেরাও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।
দুপুরে পথে নামে ডেবরা নাগরিকবৃন্দ। তাঁরা বালিচক টিকিট কাউন্টার থেকে ধিক্কার মিছিল করে বালিচক থানা পর্যন্ত যায়। তার পরে মদের ঠেক বন্ধ, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, প্রতিটি রাস্তায় পুলিশ টহল, পথবাতি-সহ পাঁচ দফা দাবিতে থানায় স্মারকলিপি জমা দেয়। ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “এই ধিক্কার মিছিলের কর্মসূচিতে ব্লকের শিক্ষক, পড়ুয়া, ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মী-সহ সর্বস্তরের মানুষ পথে নেমে পা মিলিয়েছেন। থানার ওসি আমাদের দাবি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।” বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা এই ঘটনার দ্রুত বিচারপর্ব যাতে শেষ হয় সেই চেষ্টা করব। এলাকাতেও টহলদারি বাড়ানো হবে।”