মৃদু কণ্ঠ, আলাপচারিতায় প্রেমে পড়ে যান যুবক। বেশ জমে উঠেছিল। ফোনেই প্রেম নিবেদন করেছিলেন যুবক। পাঠাতেন টাকা। প্রতীকী চিত্র।
‘বাতাসে বহিছে প্রেম’। সামনেই ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। প্রেমের এই সপ্তাহে শনিবার ‘প্রমিস ডে’। সে দিনই বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ করলেন এক যুবক। খুইয়ে বসলেন প্রায় লাখ খানেক টাকা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর।
সমাজমাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল এক জনের সঙ্গে। ‘হাই-হ্যালো’ থেকে মন দেওয়া-নেওয়ায় খুব বেশি সময় ব্যয় করেননি দাসপুরের প্রেমিক। ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতেন। কিন্তু হঠাৎই যুবক আবিষ্কার করলেন, তাঁর প্রেমিকা আসলে মেয়ে নন। ‘ছদ্মবেশী’ ‘প্রেমিকা’র জালে প্রায় ৯০ হাজার টাকা খুইয়েছেন তিনি। শেষে প্রেমিকা, থুড়ি যুবককে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
দাসপুরের ওই যুবকের দাবি, বেশ কিছু দিন আগে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় চন্দ্রকোনার এক ‘মহিলা’র। মৃদু কণ্ঠ, উষ্ণ আলাপচারিতায় প্রেমে পড়ে যান তিনি। বেশ জমে উঠেছিল প্রেম। ফোনেই ভালবাসা নিবেদন করেছেন। এবং ‘প্রেমিকা’ তা গ্রহণও করেছেন। তার মধ্যে ‘প্রেমিকা’ আবদার করেন যে, তার কিছু টাকার দরকার। এই ভাবে ধাপে ধাপে ৯০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন যুবকের কাছ থেকে। তবু সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ ঠোক্কর। এক দিন প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বার কয়েক পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পান প্রেমিক। এটা কী হল! প্রেমিকের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।
কী ভাবে সন্দেহ দূর করা যায় ভাবতে ভাবতে ‘প্রেমিকা’র ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করার ভাবনা আসে যুবকের মনে। আগেই তিনি জেনেছিলেন ‘প্রেমিকা’র ভাই মেকআপ আর্টিস্ট। তাই কনে সাজানোর নাম করে ‘প্রেমিকা’র ভাইকে দাসপুরে ডাকেন তিনি। তাঁকে জাঁকিয়ে ধরতেই পর্দাফাঁস। ওই মেকআপ আর্টিস্ট জানান, যাঁকে তাঁর দিদি বলে ভেবে বসে আছেন যুবক, তিনি আসলে তাঁর দাদা। সমাজমাধ্যমে মেয়ের নাম এবং ভুয়ো ছবি দিয়ে একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তাঁর দাদা। মহিলা কণ্ঠে কথা বলতেন। তাতেই ‘ফাঁদে’ পড়েছেন যুবক।
সব কিছু জানার পর রাগে-দুঃখে এবং ক্রোধের বশে বন্ধুদের ডেকে আনেন ওই প্রেমিক। পাকড়াও করা হয় প্রেমিকারূপী যুবককে। এর পর তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা রুজু করা হবে। কিন্তু সত্যি জানার পর মুষড়ে পড়েছেন প্রেমিক। বলছেন, ‘‘বড্ড ভালবেসে ফেলেছিলাম। সেটাই ভুল হল!’’