সুকান্তের কথায়, ‘‘উনি (রাজ্যপাল) আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘সবার উপরে সংবিধান। তার উপরে কিছু নেই’।’’ ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে একের পর এক ইস্যুতে নিশানা করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঠিক তখনই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার প্রায় ২ ঘণ্টা রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বৈঠকের পর রাজভবনের সামনে যখন তিনি এসে দাঁড়ালেন, তখন দৃশ্যতই খুশি দেখাল সুকান্তকে। বললেন, ‘‘এক এক জনের কাজের স্টাইল (ধরন) এক এক রকম।’’ লোকায়ুক্ত নিয়ে রাজ্যপালের পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেন সুকান্ত।
তিন দিন আগেই বিধানসভার বাইরে ‘রাজ্যপাল গদি ছাড়ো’ স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছিল বিজেপি বিধায়কদের। শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ‘খপ্পরে’ পড়েছেন রাজ্যপাল। তবে শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পর সুকান্ত জানান, রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাঁর। বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যপাল তাঁকে ‘আশ্বস্ত’ করেছেন। সুকান্তের কথায়, ‘‘উনি (রাজ্যপাল) আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘সবার উপরে সংবিধান। তার উপরে কিছু নেই।’ এর আগে যিনি রাজ্যপাল ছিলেন, মাননীয় লা গণেশনের সময় লোকায়ুক্ত গঠন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা আইন মেনে হয়নি। এ নিয়ে রাজ্যকে জানিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। এ জন্য বিধানসভার আগামী অধিবেশনে অর্ডিন্যান্স জারি হবে।’’ সুকান্তের সংযোজন, ‘‘রাজ্যপাল জানিয়েছেন দুর্নীতির সঙ্গে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি তাঁর। পাশাপাশি, বলেছেন, রাজনীতিতে হিংসার কোনও জায়গা নেই। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এই সব ব্যাপারেই ওঁর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।’’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সময় রাজ্য বনাম রাজভবনের সংঘাত ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তখন বিজেপি নেতারা রাজ্যপালের ভূমিকায় খুশি ছিলেন। অন্য দিকে, শাসকদল অভিযোগ করত, সাংবিধানিক পদে বসে রাজনীতি করছেন ধনখড়। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই ছবি বদলে গেল রাজ্যে। নতুন রাজ্যপালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভাতেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। রাজ্যপালের গাড়ির সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিচ্ছেন। রাজ্যপালকে নিয়ে সরব হচ্ছেন শুভেন্দু। এই প্রেক্ষিতে রাজ্যপালের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতির বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সুকান্ত বলছেন, রাজ্যপালের ভূমিকায় তিনি খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘এই যে লোকায়ুক্তের কথা বললাম, আমাদের রাজ্যপাল যে সেটা অসাংবিধানিক বলে রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছেন, তা সংবাদমাধ্যমের সামনে আনেননি তিনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আগামী দু’এক দিনে আরও অনেক কিছু দেখতে পাবেন।’’