সমবায় থেকে ফের জয়ী প্রগতিশীল জোট। প্রতীকী চিত্র।
পাঁশকুড়ার পরে এবার তমলুকের সমবায় সমিতির ভোটে তৃণমূলকে হারিয়ে জয়ী হল বিরোধী জোট। তমলুক ব্লকের পদুমপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায় বুধবার হিজলবেড়িয়া চাতরাদাঁড়ি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে ১২ আসনের মধ্যে ১১টিতে জিতেছে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল জোট সমর্থিত প্রার্থীরা। মাত্র একটি আসনে জিতেছে তৃণমূলের সমর্থিত প্রার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নির্বাচনে জয়ী প্রগতিশীল জোটে রয়েছে সিপিএমের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও অন্য তিনজন প্রার্থী। যদিও জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি-সহ অন্য সবাই জোট বেঁধে নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছিলেন। আর তাতে অধিকাংশ আসনে জয় এসেছে। বিজেপির ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে সিপিএম।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে নন্দকুমারের বহরমপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে তৃণমূলকে হারিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল বাম-বিজেপি জোট সমর্থিত প্রার্থীরা। ওই সমবায়ের নির্বাচনে জোট বাঁধার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন সিপিএম জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। ঘটনাচক্রে বুধবার তমলুকের যে সমবায় সমিতিতে প্রগতিশীল জোট জয়ী হয়েছে, সেটিও নন্দকুমার বিধানসভা এলাকার মধ্যে রয়েছে। গতবার ওই সমবায় সমিতিতে পরিচালন সমিতির ক্ষমতায় ছিলেন বামফ্রন্টের প্রতিনিধিরা।
সমবায় ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তমলুকের ওই সমবায় সমিতিতে ১২টি আসনে সদস্য প্রতিনিধি নির্বাচনে মোট ২৫ জন প্রার্থী ছিল। এর মধ্যে তৃণমূলের ১২ জন ও বিরোধী প্রগতিশীল জোটের ১২ জন প্রার্থী এবং অন্য একজন প্রার্থী ছিলেন। বুধবার পুলিশের নিরাপত্তায় সমবায়ের ভোট গ্রহনের পর গণনায় বিরোধী জোটের ১১ জন ও তৃণমূলের এক সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। এদিন সমবায় সমিতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই জয়ী প্রগতিশীল জোটের প্রার্থীরা বিজয়োল্লাসে মাতেন। ওই সমবায় সমিতির নির্বাচনে হার স্বীকার করে তমলুক ব্লকের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের মৎস্য-প্রাণীসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা বলেন, ‘‘ওই সমবায় সমিতিতে প্রায় ২০ বছর ধরেই ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএমের প্রভাবিত পরিচালন সমিতি। এবারে নির্বাচনে আমরা ১২ জন প্রার্থী দিয়েছিলাম। আর সিপিএম-কংগ্রেস ও বিজেপি জোট করে ১২ জন প্রার্থী দিয়েছিল। বিরোধী জোটের ১১ জন জয়লাভ করেছে। ওই এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। তবে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে এর প্রভাব পড়বে না।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি অবশ্য বলেন, ‘‘তমলুকে ওই সমবায় সমিতিতে ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯ জন আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী ও স্থানীয় তিনজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। সেজন্য আমরা বাম ও প্রগতিশীল জোট প্রার্থী হিসেবে প্রার্থী দিয়েছিলাম। এতে আমাদের ৮ জন এবং ৩ জন অরাজনৈতিক জয়লাভ করেছেন। ওই সমবায়ে নির্বাচনে বিজেপির সাথে জোট করার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’ অন্যদিকে, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই সমবায় সমিতিতে ১২টি আসনের মধ্যে বিজেপি’র ১১ জন প্রার্থী জয়লাভ করেছে। তৃণমূল মাত্র একটি আসনে জিতেছে। তৃণমূলকে মানুষ প্রত্যাখান করেছে।’’