—প্রতীকী ছবি।
মাঝ নভেম্বর পেরিয়ে গেল।
শীত এসে গিয়েছে। তবে এখনও রাশ নেই ডেঙ্গিতে! জেলার সবক’টি শহরের মধ্যে এ বার সর্বাধিক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন শহর মেদিনীপুরেই। শীতেও শহরে ডেঙ্গির দাপট দেখে চিন্তায় পুরকর্তারা। বিস্মিত জেলার স্বাস্থ্যকর্তারাও।
পরিস্থিতি দেখে শহরে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে যুক্ত করা হচ্ছে নির্মলসাথীদেরও। রাজ্য নগর উন্নয়ন সংস্থার নির্দেশে এই পদক্ষেপ বলে পুরসভা সূত্রে খবর। আগামী বছর ডেঙ্গির প্রকোপ যাতে এ ভাবে দেখা না- দেয়, এখন থেকে সেই পরিকল্পনাও শুরু হচ্ছে। পরিকল্পনা মতো ডেঙ্গি রোধের কাজ হবে বলে দাবি। নির্মলসাথীরা মূলত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের সঙ্গে যুক্ত। পচনশীল এবং অপচনশীল আবর্জনা আলাদা করার জন্য বাড়ি বাড়ি সবুজ এবং নীল বালতি দেওয়া শুরু হয়েছে এই শহরেও। মূলত, জঞ্জাল পৃথকীকরণের জন্য মানুষজনকে সচেতন করার কাজ করে থাকেন নির্মলসাথীরা। এ বার তাঁরা ডেঙ্গি নিয়েও মানুষজনকে সচেতন করবেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাবেন। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘‘মানুষজনকে সচেতন করা ভীষণ প্রয়োজন। তাই নির্মলসাথীদেরও যুক্ত করা হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, নির্মলসাথীদের নিয়ে শনিবার মেদিনীপুরে এক প্রশিক্ষণ- কর্মশালা হয়েছে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘এখন ডেঙ্গি প্রতিরোধে সারা বছর কাজ হয়, হবেও। নির্মলসাথীরা বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন যাবেন। দিনে ৭০-৮০টি বাড়িতে যাবেন। কী ভাবে ডেঙ্গি দমন করা যায়, সে সব জানাবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সচেতনতা প্রচার হবে নির্মলসাথীর মাধ্যমে। আগামী বছর শহরে যাতে ডেঙ্গির প্রকোপ না-দেখা দেয়, সেই জন্যই এই পদক্ষেপ।’’
মেদিনীপুর শহরে এবার ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হল কেন? সদুত্তর এড়িয়ে ওই পুরকর্তা বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে এই কাজে সফল হবে পুরসভা।’’ পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘আগের তুলনায় ডেঙ্গির লেখচিত্র নিম্নমুখী। ডেঙ্গি নির্মূল করতে মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাই বছরভর পুরসভা ওই প্রচার চালাবে। আশা করছি, ডিসেম্বরে সংক্রমণ আরও কমবে।’’
প্রতি বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে প্রথম স্থানে থাকে রেলশহর খড়্গপুরই। এ বার এ ক্ষেত্রে খড়্গপুরকে পিছনে ফেলেছে মেদিনীপুর! চলতি বছরে শহর মেদিনীপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৪৫০ পেরিয়ে গিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এর জন্য অনেকে দুষছেন পুরসভাকেই। তাঁদের অনুযোগ, মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণে শুরু থেকে যে পদক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল, পুরসভা তা করেনি। পুরপ্রধান সৌমেন খান অবশ্য বলছেন, ‘‘শুরু থেকেই যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ জেলার অন্য এলাকার তুলনায় এ বার শহর মেদিনীপুরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি তো বিপজ্জনক? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি বিপজ্জনক নয়। তবে পুরসভাকে আরও পদক্ষেপ করার কথাবলা হয়েছে।’’