সামনেই জন্মদিবস। কিন্তু বিদ্যাসাগরের জন্মভিটেতে এখনও নেই অনুষ্ঠানের কোনও প্রস্তুতি। ছবি: কৌশিক সঁাতরা
করোনা পরিস্থিতিতে থমকে গিয়েছিল গ্রামের সার্বিক উন্নয়ন। এ বার বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের দু’শো বছর পূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠান ঘিরেও তৈরি হল সংশয়। আর দিন কয়েক বাদেই সমাপ্তি অনুষ্ঠান। কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে বীরসিংহ গ্রামে সেই অনুষ্ঠান ঘিরে কোনও তৎপরতা এখনও শুরু হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, “বীরসিংহ গ্রামে সমাপ্তি অনুষ্ঠান নিয়ে এখনও সরকারি ভাবে কোনও নির্দেশ আসেনি। নির্দেশ এলেই প্রস্তুতি নেওয়া হবে।”
গত বছরই পিছিয়ে পড়া বীরসিংহকে নিয়ে তৎপরতা বেড়েছিল জেলা প্রশাসনের। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মের দু’শো বছরে অনেক কিছু পেয়েছিল সিংহশিশুর এই গ্রাম। একশো শতাংশ সাক্ষরতার লক্ষ্যে নতুন করে গ্রামে নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরসিংহ গ্রামে এসে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। গ্রামকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সেখানকার মানুষ।শান্তিনিকেতনের আদলে এডুকেশন হাব, বাস টার্মিনাস, গেস্ট হাউস, অডিটেরিয়াম, সাবির্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের মতো আরও অনেককিছু ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত একবছরে রাস্তা, পথবাতির মতো অনেক কাজ হয়েছে। তবে কিছু কাজ এখনও বাকি। জেলা শাসক বলেন, “গ্রামের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু হয়েছে। বাকি প্রকল্প গুলি নিয়েও সরকারি ভাবে প্রক্রিয়া চলছে।”
২০১৯ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উৎসবের সূচনা হয়েছিল। শিক্ষা দফতরের তরফে বীরসিংহ গ্রামে আনুষ্ঠানিক ভাবে উৎসব শুরু হয়েছিল। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সমাপ্তি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু করোনা আবহে আর সেই সমাপ্তি অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা কমিটির তরফে অনুষ্ঠানটি পালিত হবে। সেখানে শামিল হবেন গ্রামবাসীরাও। কমিটির সম্পাদক তথা বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয়ের টিচার ইন চার্জ শক্তিপদ বেরা বলেন, “স্মৃতিরক্ষা কমিটির তরফে দিনটি পালন করা হবে। তার প্রস্তুতি চলছে।’’ ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত জানান, ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকেও অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হয়েছে।গ্রামবাসীরা বলছেন, ঘটা করে না হোক। অন্তত সরকারি ভাবে দিনটি পালন হোক। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত প্রকল্প গুলি কোন পর্যায়ে রয়েছে আনুষ্ঠানিক ভাবে তা-ও জানানো হোক।