তমলুকে করোনা আক্রান্তের বাড়ির প্রায় ২৫ মিটারের মধ্যেই দোকানে কেনাকাটার ভিড় (বাঁ দিকে)। ওই এলাকাতেই বুধবার পুরসভার তরফে স্প্রে করা হয়েছে জীবাণুনাশক। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের সময়েও রাস্তাঘাটে লোকের দেখা মিলেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকানেও ভিড়ও দেখা গিয়েছে। কিন্তু শহর এলাকায় করোনা সংক্রমিতের খোঁজ মিলতেই বুধবার তমুলেক বন্ধ হল বন্ধ হল পুরসভা, বাজার, বাসস্ট্যান্ড!
তমলুক পুরসভা অফিস এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসের অদূরে একটি বাড়িতে নিভৃতাবাসে ছিলেন মহারাষ্ট্র ফেরত বছর চব্বিশের এক যুবক। সোমবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই যুবকের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে।
শহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিস মেলার পরে বাসিন্দাদের মধ্যে যেমন উদ্বেগ বেড়েছে, তেমনই নড়েচড়ে বসেছে পুর প্রশাসন। ওই যুবক যে বাড়িটিতে নিভৃতবাসে ছিলেন তাঁর সংলগ্ন এলাকা হিসাবে স্টিমারঘাট থেকে পুরসভা অফিস হয়ে জেলখানা মোড় পর্যন্ত অংশকে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করে এ দিন সকালে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়। ওই এলাকার মধ্যে থাকা কয়েকশো দোকানপাট, তমলুক-পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড, মহাপ্রভু বাজার, তমলুক টাউন কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক বন্ধ করা ছাড়াও তমলুক পুরসভা অফিসও এ দিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার পর্যন্ত এই সব দোকানপাট-সহ অফিস বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
এ দিন সকাল থেকে পুরসভা অফিস-সহ সংলগ্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করার কাজে নামেন দমকল দফতর ও পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। তমলুক পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্ত যুবক যে বাড়িতে ছিলেন সেটি পুরসভা, জেলা স্বাস্থ্য দফতর সিল করেছে। আদালত-সহ বিভিন্ন অফিস ও বাসস্ট্যান্ড, বাজার সংলগ্ন এলাকায় কড়া নজরদারি চলছে। পুরসভার অফিস-সহ এলাকার দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে আগামী রবিবার পর্যন্ত। শুধু জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর এবং পুরসভা অফিসের জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে।’’
তবে পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের এই সমস্ত পদক্ষেপের পরেও স্থানীয়দের অনেকে প্রশ্ন করেছেন, মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পর ওই যুবক পুরসভা পরিচালিত কোয়রান্টিন সেন্টারে না গিয়ে নিজের বাড়িতে কেন এলেন?’’ উল্লেখ্য, শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল ভবনে এবং কমিউনিটি হলে পুরসভার পরিচালিত ১০টি কোয়রান্টিন সেন্টার রয়েছে। এ ব্যাপারে পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে থেকে ফেরা ওই যুবক বা তাঁর পরিবার পুরসভার কোনও কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকার জন্য আমাদের জানাননি। নিজের বাড়িতে থাকার বিষয়েও আমাদের জানায়নি। এক্ষেত্রে পুরসভার কোনও গাফিলতি নেই।’’