রেল অবরোধে হাজির কুনার হেমব্রম (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
স্টেশনে স্টিল এক্সপ্রেসের স্টপেজ উঠে যাওয়ার পরে অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। তারপরে সোমবার সাতসকালে সরডিহা স্টেশনে এলাকাবাসীর সঙ্গে রেল অবরোধে সামিল হলেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম।
এ দিনের অবরোধে সরডিহা স্টেশনে প্রায় ঘণ্টা তিনেক আটকে থাকল হাওড়াগামী টাটা-হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস, বড়বিলগামী হাওড়া-বড়বিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস। কলাইকুন্ডা-খেমাশুলির মাঝে থেমে যায় মুম্বইগামী দুরন্ত এক্সপ্রেস। দীর্ঘক্ষণ অবরোধের ফলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ওই শাখার দূরপাল্লার ট্রেনগুলির যাত্রা বিলম্ব হয়।
অবরোধ কর্মসূচিতে বিজেপি সাংসদের হাজির থাকার বিষয়টিকে নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকারের রেল দফতর থেকে ট্রেনের স্টপেজ তুলে দেওয়া হল। এখন বিজেপিরই সাংসদ ভোট-রাজনীতির স্বার্থে অবরোধে হাজির হয়ে নির্লজ্জ-নাটক করছেন।’’
এ দিন সকাল সাড়ে সাতটায় সরডিহা স্টেশনে আপ ও ডাউন লাইনে বসে অবরোধ শুরু করেন সরডিহা ও মানিকপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। ৭টা ৪০ নাগাদ হাওড়াগামী স্টিল এক্সপ্রেস থামিয়ে দেন তাঁরা। তখনই অবরোধস্থলে এসে পৌঁছন কুনার। তিনি রেলমন্ত্রীকে পাঠানো তাঁর চিঠির প্রতিলিপি বিক্ষোভকারীদের দেখিয়ে উদ্যোগের কথা জানান। বিক্ষোভকারীদের বলেন, ‘‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।’’ বড়বিলগামী জনশতাব্দী এক্সপ্রেসও ওই অবরোধে আটকে পড়ে।
বিক্ষোভকারীরা জানান, তখন কুনার বারবার ডিআরএমকে ফোন করতে থাকেন। কিন্তু ফোনে সাড়া না পেয়ে ক্ষুব্ধ কুনার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের ফোন করেন। সাড়ে আটটা নাগাদ রেলের দুই আধিকারিক ও আরপিএফ বাহিনী সড়কপথে এসে পৌঁছন। আসেন ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্যসুন্দর ভট্টাচার্য। রেল ও আরপিএফের আধিকারিকেরা অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করলেও এলাকাবাসী জানিয়ে দেন, রেলের উচ্চমহল থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ তোলা হবে না। সকাল সোয়া দশটা নাগাদ দলীয় বৈঠকে যোগ দেওয়ার কারণ দেখিয়ে চলে যান বিজেপি সাংসদ। তারপরে আসেন খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী। তিনি এলাকাবাসীর দাবি দ্রুততার সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন। তাঁর নির্দেশে সরডিহার স্টেশন ম্যানেজার লিখিত প্রতিশ্রুতিও বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দেন।