নতুন দায়িত্বে দেব। — ফাইল চিত্র।
পযর্টন শিল্পে বাংলার মুখ হলেন ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী তথা দেব। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেবকে বাংলার শুভেচ্ছা দূত (ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার) করার কথা ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে পযর্টন দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণা জানাজানি হতেই ঘাটালে উল্লাস প্রকাশ করেন দেবের ঘনিষ্ঠরা। ঘাটাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মাজি দলীয় কর্মীদের মিষ্টি খাওয়ান। দলীয় অফিসে আসেন সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না। সমাজমাধ্যমে দেবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একের পর এক পোস্ট হতে থাকে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও সমাজমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে দেন।
দেব ঘাটালের সাংসদ। তাঁর আদি বাড়ি কেশপুরের মহিষদায়। দেবের জেঠতুতো দাদা সুজিত অধিকারী বলছেন,‘‘শুনেছি দেবকে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাল লাগছে। এটা তো আমাদের কাছেও গৌরবের বিষয়।’’ ঘাটাল মহকুমার সঙ্গেও ছোট থেকেই দেবের যোগাযোগ রয়েছে। চন্দ্রকোনা শহরে তাঁর মামার বাড়ি। ২০১৪ সালে সাংসদ হওয়ার পর থেকে ঘাটালের সঙ্গে দেবের সম্পর্ক আরও বাড়ে। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য ঘাটালের সাংসদ হওয়ার পরে বীরসিংহ উন্নয়ন পষর্দের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। তারসঙ্গে ঘাটাল রবীন্দ্রশতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান, ঘাটাল হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির দায়িত্বও পান দেব। এবার পযর্টনে বাংলার মুখ হলেন তিনি। এরপরে ঘাটালের বীরসিংহকে ঘিরেও পযর্টনের বিকাশ হবে বলে মনে করছেন ঘাটালের বাসিন্দারা।
ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক শোভন দাস বলেন, “ঘাটালের জন্য তো বটেই, বাংলার জন্যও এটা খুব ভাল খবর। এতে রাজ্য জুড়ে পযর্টন শিল্পে আরও প্রসার ঘটবে। বীরসিংহকে ঘিরেও পযর্টন শিল্পে জোয়ার আসার সম্ভবনা তৈরি হল।” ঘাটাল শহরের বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী তপন রায়ের কথায়, ‘‘দেব এই ক্ষেত্রে পুরোপুরি যোগ্য। একদিকে সাংসদ ও অন্যদিকে অভিনেতা দেবের হাতযশে পযর্টন শিল্পে বদল আসবে।’’ ঘাটাল বসন্তকুমারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বীণা মান্না মনে করছেন, ‘‘দেব একজন বড় মাপের অভিনেতা। সেই সূত্রে রাজ্য তথা গোটা দেশের সঙ্গেই তিনি পরিচিত। তাঁর উদ্যোগে অনামী নানা জায়গা এবার পর্যটন শিল্পে অন্তর্ভুক্ত হবে।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতিও বলছেন, ‘‘দেব গোটা বিশ্ব ঘুরে বেড়ানো ছেলে। মুখ্যমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
বিরোধীরা অবশ্য এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক সাঁতরা বলেন, “দেব একজন অভিনেতা, সাংসদ। ঠিক আছে। তা বলে পযর্টন শিল্পে তিনি বাংলার মুখ! ঘাটালের বাসিন্দারা অসময়ে তাঁকে পান না। তিনি গোটা বাংলার দায়িত্ব কী করে সামলাবেন!” ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাটের অভিযোগ, ‘‘উনি সাংসদ হয়েও সংসদে যান না। নিজের লোকসভা এলাকার উন্নয়নে নজর নেই। বন্যা ফুরিয়ে গেলে বেড়াতে আসেন। এবার পযর্টন শিল্পটাও মুখ থুবড়ে পড়বে।”