ইউনিয়ন গির্জায় প্রার্থনা। নিজস্ব চিত্র।
আলোর রোশনাই গত বছরও ছিল, এ বারেও আছে। তবে গত বছর করোনা সংক্রমণের জন্য গির্জায় জমায়েত হয়নি। এবার করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাই করোনা বিধি মেনে প্রার্থনায় ভিড় জমল গির্জাগুলিতে। ছবিটা রেলশহর খড়্গপুরের।
শুক্রবার রাতে প্রতিটি গির্জায় প্রার্থনার পরে শনিবার সকালেও ভক্তরা এসেছিলেন। যদিও চিরচেনা সেই ভিড় এবারও দেখা যায়নি। তবে গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা সম্ভব হওয়ায় অনেকেই বলছেন, যেন পুনর্জন্ম হয়েছে যিশুর। মিশ্র সংস্কৃতির শহরের রীতি বজায় রেখে সুসজ্জিত গির্জায় ভিড় জমিয়েছিলেন অন্য ধর্মের মানুষও। প্রতিটি গির্জায় ঢোকার মুখে মাস্ক রয়েছে কি না যাচাই করা হয়েছে। যাঁদের মাস্ক নেই তাঁদের মাস্ক দেওয়া হয়েছে। গির্জাগুলিতে সচেতনতার ছবি চোখে পড়লেও তার বাইরে বড়দিনের ভিড়ে করোনা বিধি ভাঙার ছবিই বেশি চোখে পড়েছে। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না।
ব্রিটিশ জমানায় খড়্গপুরের সাউথ সাইড এলাকাতেই কয়েকটি গির্জা ছিল। পরে শহরের অন্যত্র আরও গির্জা গড়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে শহরের সাতটি গির্জায় প্রতিবার সাড়ম্বরে এই ক্রিসমাস পালিত হয়। দেখা যায় আলাদা উদ্দীপনা। গত বছর তাল কাটে। করোনার জন্য গির্জাগুলিতে আলো জ্বললেও সর্বসাধারণ প্রার্থনা করতে পারেননি। প্রধান কয়েকজন সেরেছিলেন মধ্যরাতের প্রার্থনা। এ বার সেই নিষেধ তুলে নেওয়া হয়। সেক্রেড হার্ট গির্জায় বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় প্রার্থনা হয়েছে। ওই গির্জার সদস্য কল্পনা জোসেফ বলেন, “গত বছর মন খুব খারাপ ছিল। গির্জায় প্রার্থনা হয়নি। এ বার মনে হচ্ছে যেন যিশুর পুনর্জন্ম হল। তিনটি ভাষায় প্রার্থনা চলেছে। অন্য ধর্মের মানুষও প্রার্থনায় যোগ দিয়েছিলেন। আমিও গত ২০ ডিসেম্বর শহরের সর্বধর্মের মানুষকে নিয়ে প্রাক বড়দিন পালন করেছিলাম। এটাই আমাদের মিনি ইন্ডিয়ার বিশেষত্ব। তবে করোনার আগে যেমন ভিড় হত তা এবার হয়নি।’’
শহরের ওল্ড সেটলমেন্টের সেন্ট অ্যান্টনি গির্জার সদস্য অনিতা ব্যাপটিস বলেন, “আমি বিবাহ সূত্রে খ্রিস্টান। বিয়ের পর থেকে এতগুলো বছরে বড়দিন যেন প্রাণের উৎসব হয়ে উঠেছে। গত বছর তা অধরা থাকায় মন খারাপ ছিল। এবার গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে।” সাউথ সাইডের ১২৫ বছরের ইউনিয়ন গির্জার সদস্য কমল বাগ বলেন, “বড়দিনের সকালের প্রার্থনায় মাত্র দু’শো মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। করোনার আগে চারশোর বেশি মানুষ প্রার্থনায় আসতেন।’’