গেরুয়া ক্ষত সারানোর ভার ‘ডাক্তারবাবু’কে

লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্রে ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল। শুধুমাত্র খড়্গপুর শহরেই ৪৫হাজার ভোটে ‘লিড’ পেয়েছে বিজেপি। তার পরেই দায়িত্ব নিয়ে বারবার খড়্গপুরে এসে সংগঠন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৪
Share:

দায়িত্ব বাড়ল মানস ভুঁইয়ার। ফাইল চিত্র

বিজেপির ‘গড়’ ভাঙতে জেলা পর্যবেক্ষক হিসাবে প্রথমে দায়িত্ব পেয়েছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বারবার রেলশহরে ছুটে এসে লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছেন শুভেন্দু। কিন্তু গেরুয়া কামড়ের ঘা সারাতে একা শুভেন্দু নয়, এ বার ডাক পেলেন ডাক্তারবাবু!

Advertisement

খড়্গপুর ও মেদিনীপুর শহরে সাংগঠনিক নজরদারির দায়িত্ব পেলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ তথা চিকিৎসক মানস ভুঁইয়া। প্রশাসনিক বৈঠকের আগে বুধবার ডেবরায় দলের জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই বৈঠকেই খড়্গপুরের পাঁচ নেতাকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন তৃণমূলনেত্রী। পাঁচ নেতা একসঙ্গে কাজ করছেন বলেও জানান। এমনকি, এক নেতা বলেন তাঁরা খড়্গপুর উপহার দেবেন। এর পরেই মানসকে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের সাংগঠনিক বিষয়ে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা।

লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর কেন্দ্রে ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল। শুধুমাত্র খড়্গপুর শহরেই ৪৫হাজার ভোটে ‘লিড’ পেয়েছে বিজেপি। তার পরেই দায়িত্ব নিয়ে বারবার খড়্গপুরে এসে সংগঠন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু। পাল্টা নিজের ‘গড়’ এই রেলশহরে এসে জনসংযোগে জোর দিচ্ছেন সাংসদ তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রেলশহরে বিধানসভা উপ-নির্বাচন এখন ঘোষণার অপেক্ষা। পরের বছর রয়েছে পুরসভা নির্বাচন। এর মাঝে মানসকে খড়্গপুরের দায়িত্ব দিলেন মমতা। দায়িত্ব পেয়ে মানস বলছেন, “নেত্রী আমাকে খড়্গপুর ও মেদিনীপুর শহরের সাংগঠনিক পরিস্থিতি দেখতে বলেছেন। শুভেন্দুবাবু তো আমাদের পর্যবেক্ষক। আমি দলনেত্রীর নির্দেশ ও শুভেন্দুবাবুর পরামর্শ মতো আমি কাজ কাজ করব। এই দায়িত্ব আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” কী ভাবে দায়িত্ব পালন করবেন তার আভাসও দিয়েছেন মানস। বলেছেন, ‘‘একটি হুজুগে মেতে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন অনেকে। এ বার তাঁরা আস্তে-আস্তে বুঝতে পারছেন যে কী বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে খড়্গপুরে। রেলে কোনও কাজ হচ্ছে না। এই বিষয়গুলি আমরা লাগাতার তুলে ধরব।”

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরের খবর, নেত্রী আসলে নবীন-প্রবীণের মেলবন্ধন চেয়েছেন। তাই সাংগঠনিক বিষয়ে শুভেন্দুর পাশাপাশি দায়িত্ব দিয়েছেন মানসকেও। আগামী শনি ও রবিবার শহরে ফের আসছেন শুভেন্দু। শনিবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে শহরের টাউনহলে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তিনি। আর আগামী রবিবার শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে কলকাতা, দিঘা, আসানসোল ও তারাপীঠের জন্য চারটি এসি বাস উদ্বোধন করবেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু। ওই মঞ্চ থেকেই বরাদ্দকৃত ৬০লক্ষ টাকায় পুরসভার মাধ্যমে শহরের ইন্দার রাস্তায় পথবাতির কাজের সূচনা করবেন। তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী আমাদের পর্যবেক্ষক। মানসদাকেও খড়্গপুর-মেদিনীপুর দেখার কথা বলেছেন নেত্রী। শনিবার ও রবিবার দু’টি কর্মসূচিতে ফের শুভেন্দু অধিকারী আসবেন। মানুষের কাছে আমরা এগিয়ে আছি, এগিয়ে থাকব।”

অবশ্য তৃণমূল শহরে এভাবে প্রভাব বাড়ানোর কথা বললেও বিজেপি জমি ছাড়তে নারাজ। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের কাছে আমার প্রস্তাব, শুভেন্দু অধিকারী, মানস ভুঁইয়াকে নয়, উনি নিজে খড়্গপুরে এসে অক্লান্ত পরিশ্রম করুন। প্রয়োজনে প্রশান্ত কিশোরকেও নিয়ে আসুন। কিন্তু দিলীপদার নেতৃত্বে আমরা কর্মীরাই যথেষ্ট। তাই আমাদের চ্যালেঞ্জ, মানুষের ভালোবাসায় লোকসভার থেকেও আগামী নির্বাচনে বেশি ‘লিড’ পাব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement