Mamata Banerjee

জুনকে বলতে পাঠিয়ে কথা শ্রীকান্তর সঙ্গে

গত সেপ্টেম্বরে খড়্গপুরে এসে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে এক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই বৈঠকে ওই দুই বিধায়কের মিলমিশ করিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৮
Share:

শ্রীকান্তর সঙ্গে কথা বলছেন মমতা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

একসময়ে যাঁকে দিয়ে ক্ষমা চাইয়েছিলেন, এদিন মঞ্চে কাছে ডাকলেন তাঁকেই। কথাও বললেন। তবে যাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছিলেন তাঁকে পাঠালেন খানিক তফাতে। বিধায়ক জুন মালিয়া ও মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোকে কাছে-দূরে রেখে যেন ভারসাম্যের পাঠ পড়িয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

এদিন মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভায় জুনকে বক্তৃতা করতে বলেন মমতা। জুন যখন বক্তৃতা করতে গেলেন, তখনই শ্রীকান্ত মাহাতোকে কাছে ডেকে নিয়ে তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? শ্রীকান্ত শোনাচ্ছেন, ‘‘দলের কাজকর্ম আরও ভালভাবে করার কথাই বলেছেন।’’ সাঁওতালি শিক্ষা সংক্রান্ত নানা দাবিতে বুধবারই শালবনিতে রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল আদিবাসী জনজাতিদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। একাধিক মহলের অনুমান, শালবনির ওই ব্যাপারে শ্রীকান্তর কাছ থেকে খোঁজখবর নিয়ে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি এই জেলার তৃণমূল বিধায়কেরাও ছিলেন। মমতার একপাশে বসেছিলেন অভিনতা-সাংসদ দেব। দেবের পাশে ছিলেন জুন। একই সারিতে ছিলেন শ্রীকান্ত। কয়েক মাস আগে তৃণমূলের তারকা সাংসদ, বিধায়ক ও তাঁর দলেরই একাংশ জেলা নেতা-নেত্রীর সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শ্রীকান্ত। এক পাড়া বৈঠকে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, নুসরতরা লুটেপুটে খাচ্ছে। এঁরা যদি সম্পদ (দলের) হয়, তাহলে তো আর পার্টি করা যাবে না!’’ দাবি করেছিলেন, দল এখন ‘খারাপ’ লোকেদের কথা শুনছে। শ্রীকান্তর বক্তব্যের ভিডিয়ো ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এরপরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শালবনির বিধায়ককে শো-কজ় করেছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব। বেফাঁস মন্তব্যের জন্য এরপর দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন শালবনির বিধায়ক। ওই মন্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীও বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জুনের কাছেও ভুলস্বীকার করেছিলেন শ্রীকান্ত।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বরে খড়্গপুরে এসে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে এক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই বৈঠকে ওই দুই বিধায়কের মিলমিশ করিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। সেদিন বৈঠক শেষে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতির দাবি ছিল, ‘‘দু’জনকে মিল করিয়ে দিয়েছেন দলনেত্রী।’’ চার মাস পরে এদিন ফের একমঞ্চে হলেন জুন ও শ্রীকান্ত। সভার শুরুর দিকেই জুনকে বক্তৃতা করার কথা বলেন মমতা। মেদিনীপুরের বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আপনাদের কথা মাথায় রেখেছেন। আপনাদের কথা ভেবেই প্রত্যেকটি প্রকল্প করেছেন। মা-বোনেরা যাতে ভাল থাকতে পারে। ছাত্রছাত্রী, কৃষকেরা যাতে ভাল থাকতে পারে। বাংলাতে যাতে আরও শিল্প আসে। যাতে আরও কর্মসংস্থান বাড়ে। রাজ্য যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে। উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে।’’

বুধবারই অবরোধ কর্মসূচি হয়েছিল শালবনিতে, সেই প্রসঙ্গেই কি কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী? শ্রীকান্তর দাবি, ‘‘না না, তেমন কিছু নয়। সাংগঠনিক কিছু কথাই হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূলের এক নেতা শোনাচ্ছেন, ‘‘ওই দুই বিধায়কের মধ্যে আর ভুল বোঝাবুঝি নেই। সে সব ক্লোজড চ্যাপ্টার!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement