—প্রতীকী চিত্র।
'লক্ষ কণ্ঠে গীতা' শুনবে ব্রিগেড। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সনাতন সংস্কৃতি সংসদ, মতিলাল ভারত তীর্থ সেবা মিশন আশ্রম ও অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ নামে তিনটি সংগঠন এর আয়োজন করছে। উৎসাহ তুঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে।
জেলার মঠ ও মিশনের আশ্রমিক, স্কুল এবং কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে গ্রামের প্রান্তিক মানুষের সেখানে অংশ নেওয়ার কথা। শুধু পূর্ব মেদিনীপুর থেকে পাঁচ হাজার লোকের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছিল। যা পরিস্থিতি তাতে দু'সপ্তাহ আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলা গিয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের।
২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে হাজির থাকার কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজ্যের সমস্ত বিধায়ককেও। জেলা থেকে সকলকে যাওয়ার জন্য একাধিক বার আবেদন জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি তাদের কোনও সম্পর্ক নেই বলে মুখে দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবু, এই কর্মসূচি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে শুভেন্দুর জেলাতেই।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, গীতা পাঠের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য আগাম আবেদন জানাতে হচ্ছে। অনলাইন এবং অফলাইন পদ্ধতিতে চলছে আবেদন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া। পূর্ব মেদিনীপুরের ২৫ টি ব্লক এবং পাঁচটি পুরসভা থেকে পাঁচ হাজার মানুষকে হাজির করানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। অফলাইনে আবেদন করার জন্য একটি ফর্ম সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এবং তার জন্য ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আয়োজক সংস্থাগুলির অন্যতম কর্মকর্তা প্রভাত কুমার মিশ্র বলছেন,‘‘অনলাইনে কত আবেদন জমা পড়েছে সেটা বলা মুশকিল। তবে শুধু কাঁথি শহরের ২১টি ওয়ার্ড থেকে ২৩০ জন মানুষ অংশগ্রহণের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন।"
শুধু কাঁথি শহর নয়, গোটা জেলা জুড়েই গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে বলে খবর মিলেছে। সেই তালিকায় তমলুক নগর মণ্ডল, হলদিয়া, নন্দীগ্রাম, এবং ভগবানপুরের মতো এলাকা রয়েছে। কর্মসূচি দেখভালের দায়িত্বে থাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ খাড়া বলছেন,"গোটা জেলা থেকে পাঁচ হাজার লোক জড়ো করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে অফলাইনে পাঁচ হাজারের বেশি আবেদন পত্র এসেছে। অনেকে অনলাইনেও আবেদন করছেন। এখনও অনেক দিন বাকি রয়েছে। কর্মসূচি নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রাক্কালে রামনবমী উদযাপনে ব্যাপক সাড়া মিলেছিল। পরবর্তীকালে সেই অঙ্কে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা হেরে গেলেও বিপুল পরিমাণ জনসমর্থন পেয়েছিল বিজেপি। গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে জেলাতে সাফল্য এসেছে গেরুয়া শিবিরে।
রাজনৈতিক মহলের খবর, সামনে লোকসভা ভোট। তার আগে ধর্মীয় সংগঠনের ব্যানারে গীতা পাঠ কর্মসূচিতে শুভেন্দুর জেলা থেকে বেশি সংখ্যক মানুষকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা তলে তলে চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। তবে এমন দাবি প্রকাশ্যে মানছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন,"ধর্মীয় সংগঠনের উদ্যোগে গীতা পাঠ হচ্ছে। প্রায় সব ধর্মের লোকেরই সেখানে অংশ নেবেন। যাঁরা নিয়মিত গীতা পাঠ করেন তাঁরা যাবেন। এই কর্মসূচির সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।’’