চালুর অপেক্ষায় দিঘা-মোহনায় মৎস্য বিপণন কেন্দ্র।
কাঁথি-সহ আশপাশের এলাকায় করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই দিঘা মোহনা মৎস্য বিপণন কেন্দ্র চালু করার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বাসিন্দারা। এ বার শঙ্করপুরেও মৎস্য বন্দর চালু করা নিয়ে আপত্তি জানাল সেখানকার বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার বিকেলে শঙ্করপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই মৎস্য বন্দর চালু করা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান স্থানীয় মানুষ। প্রসঙ্গত, শঙ্করপুর থেকে শ’তিনেক ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। একই সঙ্গে সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফাঁকা থাকায় মাছ ধরার জাল সারানোর কাজ চলে প্রতি বছর। ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা ওই সব কারিগর চলতি বছর আসতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। ফলে চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছে ট্রলার মালিকদের। সংগঠনের সম্পাদক স্বদেশ নায়ক বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কের কথা ভেবে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার কাজকর্ম এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। মৎস্য দফতরকেও এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
দিন কয়েক আগে দেশপ্রাণ ব্লকের পেটুয়াতে ট্রলার তৈরির সঙ্গে যুক্ত দু’জন কারিগরকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি ওই দুই কারিগরের। কারণ তাঁরা যে এলাকার বাসিন্দা, সেখানে দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়। একই পরিস্থিতি কাঁথি-১ ব্লকের শৌলা মৎস্য বন্দরে।
আগামী ১৫ জুন থেকে মাছ ধরার মরসুম শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তার কয়েকদিন আগে উপকূলবর্তী এলাকার চারটি মৎস্য বন্দরে যে ভাবে স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভ হচ্ছে তাতে মাছ ধরা ও তার বিপণন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ট্রলার মালিক ছেকে মাছ ব্যবসায়ীরা। মৎস্যজাবীদেরও অভিযোগ, লকডাউনের জন্য তাঁদের রুটিরুজি প্রায় বন্ধ। অবশেষে যখন তা ফের চালুর চেষ্টা হচ্ছে তখন এই ধরনের বিক্ষোভে আদতে তাঁদেরই ক্ষতি হবে। তা ছাড়া মাছের বাজার না চালু হলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মাছ পাঠানো যাবে না। সে ক্ষেত্রেও মাছের জোগানে সঙ্কট দেখা দেবে।
সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ থেকে মৎস্য বন্দরগুলিকে বাঁচিয়ে কী ভাবে তা চালু করা যায় এবং কী কী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা যায় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পেশায় যুক্ত সকলকে নিয়ে প্রশাসনিক সভা ডাকা হয়েছে।’’
মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দিঘা-সহ চারটি মৎস্য বন্দর চালু করা নিয়ে স্থানীয় স্তরে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যার সমাধানে মৎস্য দফতর প্রশাসনিক সভার আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবারের ওই সভায় ঠিক হবে আগামী ১৫ জুন থেকে ফের সমুদ্রে মাছ ধরা শুরু হবে কি না।’’