প্রতীকী ছবি।
জেলা রাজনীতিতে জমি ততটা শক্ত নয় সংগঠনের। তবে আগামী বছর বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি শুরু করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম।
করোনা এবং পুজোর জন্য প্রকাশ্যে জনসভা-সহ বিভিন্ন কর্মসূচি তেমন ভাবে বন্ধ রয়েছে ঠিকই। তবে জেলায় বুথস্তর থেকে বিধানসভাস্তর পর্যন্ত নির্বাচনী কমিটি গড়া শুরু করেছে সিপিএম।
গত ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের মত এবারও বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট সম্ভবনা রয়েছে। তবে বামফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম সাংগঠনিকভাবে নিজেদের দলীয় নির্বাচনী কমিটি গড়ে প্রচার চালানোর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। ২০১৬ সালের জেলার ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। বামফ্রন্ট পায় তিনটি কেন্দ্র। এর মধ্যে হলদিয়া ও পূর্ব পাঁশকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিল সিপিএম এবং তমলুক কেন্দ্রে জেতে সিপিআই।
গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে জেলায় তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। তবে বিভিন্ন বিষয়ে জেলায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস যৌথভাবে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করেছে বামফ্রন্টের প্রধান শরিক সিপিএম। নির্বাচন দফতরের হিসাব অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুরে চার হাজার ৩৫৪টি ভোটগ্রহণ বুথ রয়েছে। প্রতিটি বুথের জন্য দলীয়ভাবে সিপিএমের নির্বাচনী বুথ কমিটি গড়া হচ্ছে। প্রতিটি বুথে ন্যুনতম সাত সদস্যের কমিটি গড়া হচ্ছে।
দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বুথস্তর নির্বাচনী কমিটিতে সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্বরা ছাড়াও দলের যুব, ছাত্র, মহিলা, কৃষক, খেত মজুর সংগঠনের প্রতিনিধিদের রাখা হচ্ছে। কমিটিতে বাম মনোভাবাপন্ন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরও রাখার কথা জানানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে জেলার দু’হাজার ৩৪৬টি বুথে নির্বাচনী কমিটি গড়ান হয়েছে। বাকি বুথগুলিতেও আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচনী কমিটি গড়ার কাজ শেষ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। বুথস্তরের পরের গড়া হবে অঞ্চল ও বিধানসভা নির্বাচনী কমিটি। বুথ স্তরের নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়কদের নিয়ে গড়া হচ্ছে অঞ্চল নির্বাচনী কমিটি। জেলার ৩২৩টি অঞ্চল নির্বাচনী কমিটি গড়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে।
বিধানসভা স্তরে কমিটিতে থাকছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার এরিয়া কমিটির সম্পাদকেরা, জেলা কমিটির সদস্য এবং অঞ্চল নির্বাচনী আহ্বায়ক। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ওই কমিটিও গড়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে। নির্বাচনী কমিটি গড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এবং কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালাবেন দলের কর্মীরা। পুজোর পরেই সেই কর্মসূচি শুরু করছে বামফ্রন্ট। যার অঙ্গ হিসাবে কেন্দ্রের কৃষি এবং শ্রমিক বিলের প্রতিবাদ-সহ ১৬ দফা দাবিতে আগামী ২৬ নভেম্বর দেশব্যপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্য রেখে দলীয় প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। এ জন্য বুথ স্তর থেকে বিধানসভা স্তর পর্যন্ত দলের নির্বাচনী কমিটি গড়ার কাজ চলছে। বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচির পরিকল্পনা হয়েছে।’’