—প্রতীকী চিত্র।
ক’দিন আগেই আদিবাসী দিবসে ঝাড়গ্রাম ঘুরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন কুড়মিদের দাবিদাওয়া প্রসঙ্গে তিনি নীরব ছিলেন। এ বার আলোচনার জন্য আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতৃত্বকে নবান্নে ডাকা হল। সূত্রের খবর, আজ, মঙ্গলবার নবান্নে ওই বৈঠক হওয়ার কথা। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নাকি সরকারি স্তরের কোনও সচিব পর্যায়ের বৈঠকে কুড়মি নেতাদের ডাকা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
জানা গিয়েছে, আগামী মাসে আদিবাসী কুড়মি সমাজের ঘোষিত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে রাজ্য সরকার। কুড়মিদের বিষয়ে রাজ্যের অবস্থানও স্পষ্ট করা হতে পারে। সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে কুড়মি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থায় চার জেলার কুড়মি নেতাদের নবান্নে নিয়ে যাওয়া হবে।
গত শুক্রবার ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের রাজ্যস্তরীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ওই দিন কুড়মি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নীরব ছিলেন। শুক্রবারের সরকারি মঞ্চে বিভিন্ন আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব ছিলেন। এ ছাড়াও ছিলেন জঙ্গলমহলে স্বশাসনের ডাক দেওয়া ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অসিত খাটুয়া। অসিত অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক পর্ষদের সদস্য হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন। তবে এবারও আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের কেউ আমন্ত্রিত ছিলেন না।
এরপরই ক্ষুব্ধ হন আদিবাসী কুড়মি সমাজের ‘মূল মানতা’ অজিতপ্রসাদ মাহাতো। অজিত জানিয়ে দেন, দাবি আদায়ের জন্য পূর্ব ঘোষিত ‘রেল টেকা’ ও ‘ডহর ছেঁকা’ আন্দোলন থেকে তাঁরা সরছেন না। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে জাতিসত্তার দাবিতে জঙ্গলমহলে লাগাতার রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। অজিতপ্রসাদ বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার নবান্নে আমাদের সংগঠনের নেতৃত্বকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে।’’ তবে মৌখিক ভাবে বৈঠকে ডাকার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অজিতপ্রসাদ বলেন, ‘‘সরকারি বৈঠকে সরকারি ভাবে চিঠি দিয়ে ডাকা উচিত।’’
লোকসভা ভোটের আগে গত ফেব্রুয়ারিতে নবান্নে বিভিন্ন কুড়মি সামাজিক সংগঠনের নেতাদের আলোচনায় ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেবারও সরকারি ভাবে লিখিত চিঠি দিয়ে তাঁকে না ডাকায় বৈঠক এড়িয়েছিলেন অজিতপ্রসাদ। তবে তাঁর সংগঠনের অন্য নেতারা বৈঠকে গিয়েছিলেন। গতবার নবান্নের বৈঠকে কুড়মিদের নিয়ে রাজ্যের তরফে সমীক্ষার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের লোকসভা ভোটের ইস্তাহারেও কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আশ্বাস দেওয়া হয়। মঙ্গলবারের বৈঠকে অজিতপ্রসাদ নিজে যাবেন কি-না স্পষ্ট করেননি। অন্যদিকে, বৈঠকে ডাক না পাওয়ায় হতাশ কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ) এর রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলছেন, ‘‘কেন আমাদের ডাকা হল না জানি না।’’ আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো বলেন, ‘‘আমি কোনও সরকারি বৈঠকে ডাক পাইনি।’’ পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান রথীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘নবান্নে কুড়মি সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্বকে আলোচনায় ডাকা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।’’