প্রতীকী ছবি।
আগামী বিধানসভা ভোটের আগেই সবংয়ে বসতে চলছে একগুচ্ছ পথবাতি। ইতিমধ্যেই বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থ। যা বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে দরপত্র ডেকে নিয়মমাফিক এক সংস্থাকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সবংয়ে পথবাতি বসানোর কাজ শুরু হবে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘এ বার সবংয়ে পথবাতি বসানো শুরু হবে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, এ ব্যাপারে জেলা থেকে যা পদক্ষেপ করার করা হয়েছে। ব্লকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁছনো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, কাজটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে আগামী দিনে সবংয়ে একটি সমন্বয় বৈঠক করা হতে পারে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরের আধিকারিকেরা থাকতে পারেন। থাকতে পারেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পথবাতি বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে। বিষয়টি জেলা থেকেই দেখভাল করা হচ্ছে।’’
জানা যাচ্ছে, সবং জুড়ে সব মিলিয়ে ৬১টি পথবাতি বসার কথা। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। বরাদ্দ হয়েছে প্রায় এক কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। খবর, জেলার দু’টি এলাকাকে আরও আলোকিত করতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছে পরিবহণ দফতর। একটি সবং, অন্যটি ঘাটালের বীরসিংহ। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে বীরসিংহে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তবে সে ভাবে এলাকা আলোকিত করার দিকে নজর দেওয়া হয়নি। সৌন্দর্যায়নে শহরগুলিতে ত্রিফলা আলো বসেছে। সন্ধ্যা নামলে বিদ্যাসাগরের জেলার শহরগুলি যেখানে আলোয় ঝলমল করে, সেখানে তাঁর জন্মভিটের গ্রাম বীরসিংহ কার্যত অন্ধকারে ডুবে যেত! সব দেখেই বিদ্যাসাগরের জন্ম দ্বিশতবর্ষে বীরসিংহকে আরও আলোকিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অন্য দিকে, সবংয়ে পথবাতি বসানোর প্রেক্ষিত অন্য। স্থানীয় অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৭ সালে সবংয়ে বিধানসভা উপ-নির্বাচন হয়েছে। যে নির্বাচনে জেতেন তৃণমূলের গীতারানি ভুঁইয়া। সেই সময়ে গীতারানির সমর্থনে প্রচারে এসে সবংয়ে পথবাতি বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। প্রচারে তাঁকে বলতেও শোনা গিয়েছিল, ‘‘তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে সবংয়ের আরও উন্নয়ন। আপনারা তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিন। কথা দিয়ে যাচ্ছি, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে সঙ্গে নিয়ে আমি শুভেন্দু অধিকারী সবংকে সাজিয়ে দেব। ডেবরা যদি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পেতে পারে, আপনারা বঞ্চিত হবেন কেন?’’ পরে সবংয়ে পথবাতি বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে পরিবহণ দফতর। সবং মানেই কংগ্রেস। সবং মানেই মানস ভুঁইয়া। দীর্ঘ সময়ে এটাই ছিল চিরন্তন পরিচয়। পরে মানস তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি এখন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁর স্ত্রী গীতারানি ভুঁইয়া সবংয়ের বিধায়ক।
সবং জুড়ে ৬১টি পথবাতি বসার কথা। কোন এলাকার কোথায় পথবাতি বসবে, সে পরিকল্পনা হয়েছে। ওই ৬১টি পথবাতির মধ্যে ৩৮টি বাতিস্তম্ভ ৯ মিটার উচ্চতার। ২০টি ১৬ মিটার উচ্চতার, ৩টি ২০ মিটার উচ্চতার। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী তিন মাসের মধ্যেই পথবাতি বসানোর কাজ শেষ হওয়ার কথা।