দু’জেলাতেই ছড়িয়ে জাল। কীভাবে চলে ব্যবসা। খোঁজে আনন্দবাজার
Hooch

Hooch: নেশা জমাতে মিশছে না তো ‘বিষ’

পশ্চিম মেদিনীপুরেও চোলাই মদের রমরমা রয়েছে। সে মদে মেশানো হচ্ছে না তো ‘বিষ’! উদ্বেগ রয়েছে এ নিয়েও।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২ ০৭:২৫
Share:

নষ্ট করা হচ্ছে চোলাই ও চোলাই তৈরির সরঞ্জাম। নিজস্ব চিত্র।

সম্প্রতি একাধিক ভিন্ জেলায় বিষমদে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও চোলাই মদের রমরমা রয়েছে। সে মদে মেশানো হচ্ছে না তো ‘বিষ’! উদ্বেগ রয়েছে এ নিয়েও। ইথাইল অ্যালকোহলে জল মিশিয়ে তৈরি ‘বিকল্প’ মদে নেশা তেমন জমে না। তাই কিছু ক্ষেত্রে মিথাইল অ্যালকোহল মেশানো হয়। আর তা দেহে ‘বিষে’র কাজ করে। আবগারি কর্মীদের একাংশ মানছেন, এর পরিমাণ খানিক বেশি হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চোলাই মদের বিষক্রিয়ার পিছনে থাকে মিথাইল অ্যালকোহলের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ‘র’ স্পিরিটই।জেলার এক আবগারি আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরে চোলাইয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ‘র’ স্পিরিট মেশানোর চল নেই।’’ কেউ খোলাবাজারে এই স্পিরিট বিক্রি করতে পারে না। কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জানা যাচ্ছে, খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলের একটি বড় কারখানা মিথাইল অ্যালকোহল নেয় অনুমতি নিয়েই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শীঘ্রই ওই কারখানায় পরিদর্শন হতে পারে। যে পরিমাণ মিথাইল অ্যালকোহল সেখানে আসে, তা ঠিকঠাকভাবে কারখানার কাজেই ব্যবহৃত হয় কি না, সেটা দেখা হতে পারে। চোলাই মদ মূলত গুড় থেকেই তৈরি হয়। গুড়ের বিকল্প হিসেবে চালের গুঁড়ো ব্যবহার হয়। তবে চোলাই তৈরির এই পদ্ধতি তুলনায় জটিল। কিছু ক্ষেত্রে ইথাইল অ্যালকোহলে জল মিশিয়ে তৈরি হয় চোলাইয়ের ‘বিকল্প’। জেলার এক আবগারি আধিকারিক মানছেন, অতীতে ভিন্ জেলায় চোলাই মদের বিষক্রিয়ার রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে যে বিষাক্ত যৌগের প্রমাণ মিলেছে, সেটি হল মিথাইল অ্যালকোহল। বিষমদ কাণ্ডের পিছনে থাকে এই স্পিরিটই। অভিযোগ, জেলার কিছু এলাকায় চোলাইয়ের কারবার যেন ‘কুটিরশিল্পে’র চেহারা নিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় চোলাই মদের ছোট-মাঝারি ‘কারখানা’ গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। জেলা জুড়ে কয়েকশো চোলাইয়ের ঠেক রয়েছে। কোথাও চা বা অন্য খাবারের দোকানের আড়ালে ঠেক চলে, কোথাও আবার বাড়িতেই। আবগারি দফতর সূত্রের অবশ্য দাবি, চোলাইয়ের রমরমা কমেছে। কারণ, কম দামে দেশি মদ মিলছে এখন। তা ছাড়া নিয়মিত তল্লাশি-অভিযানও জারি রয়েছে। গত মাসেও কয়েক হাজার লিটার চোলাই মদ নষ্ট করা হয়েছে। চলছে ঝরপাকড়ও। চোলাই কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের শুধু জুন মাসে গ্রেফতার হয়েছিল ৫৩ জন। মামলা হয়েছে ২৭৫টি। সেখানে ২০২২ সালের শুধু জুন মাসে গ্রেফতার হয়েছে ৫৮ জন। মামলা হয়েছে ২৯৩টি। একাধিক মহলের অবশ্য পাল্টা দাবি, যে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদ বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হয়, তার বেশ কয়েকগুণ বেশি চোলাই উদ্ধার হয় না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবগারি কর্মীর স্বীকারোক্তি, ‘‘তল্লাশি-অভিযানে হয়তো ২০ শতাংশ চোলাই উদ্ধার হয়েছে। ৮০ শতাংশই হয় না।’’ জেলার এক আবগারি আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘কড়া নজরদারি রয়েছে। মোটরবাইকে বা সাইকেলে পাচারের সময়ও চোলাই বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement