—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ডাকাতদের সঙ্গে কালীপুজোর ওতপ্রোত যোগ রয়েছে এই বাংলায়। একটা সময় ডাকাতদের আরাধ্যা ছিলেন মা কালী। এখানকার গল্পটা অবশ্য আলাদা। ডাকাতের অত্যাচার বন্ধে শুরু হয়েছিল পিছাবনির কালী বন্দনা।
সেই সময় ডাকাত দলের দাপটে তটস্থ ছিল আমজনতা। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল জনজীবন। তখনই অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটাতে পিছাবনিতে শুরু হয়েছিল শ্যামা মায়ের আরাধনা। তিন শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে পিছাবনির এই ঐতিহ্যের কালীপুজো। পালিত হচ্ছে বিভিন্ন প্রথা, রীতি-নীতিও। এখানকার কালীপুজোয় জ্বলন্ত ধুনুচি মাথায় ভক্তদের শোভাযাত্রা সহযোগে শক্তির দেবীর ঘটোত্তলন হয়। এটি দর্শনার্থীদের কাছে মূল আকর্ষণ।
শ্যামাপুজো কমিটির পরিচালনায় মন্দির প্রাঙ্গণে ১০দিন ধরে মেলা চলে। থাকে যাত্রানুষ্ঠান। বসে প্রচুর দোকানপাট। পুজোর দিন ভক্তরা সঙ্গে নিয়ে আসেন বড় আকারের ধুনুচি ও ধুনা। সন্ধ্যায় তাঁরা পিছাবনি খালের পাশে ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ধারে জড়ো হন।
ধুনুচিগুলি সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে তাতে ধুনা দিয়ে আগুন ধরানো হয়। ভক্তেরা খালে স্নানের পর সেই জ্বলন্ত ধুনুচি মাথায় করে কালীমন্দিরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, যেন খাল থেকে আগুনের হলকা উঠে আসছে। তার পর ভক্তেরা মায়ের কাছে অঞ্জলি দেন। কাঁথি, রামনগর এমনকি প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা থেকেও বহু মানুষ এই পুজো দেখতে ভিড় জমান।
শ্যামাপুজো কমিটির সম্পাদক পূর্ণেন্দু প্রধান এবং সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ প্রধান বলেন, "বহুকাল আগে পিছাবনি এলাকাটি জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। এলাকায় প্রচুর ডাকাতের উপদ্রব ছিল। এই অশুভ শক্তির প্রভাব এড়াতে এলাকায় মা কালীর পুজো শুরু হয়েছিল। পিছাবনি-সহ আশপাশের এলাকার প্রচুর মানুষ মায়ের কাছে পুজো দেন এবং মানত করেন।’’