মৃত সৌরদীপ চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। এই প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে ভিন্রাজ্যে পড়তে গিয়ে ছেলের রহস্যমৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন চিকিৎসক বাবা। এ নিয়ে তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিকিৎসক সুদীপ চৌধুরীর অভিযোগ, অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার কলেজের হস্টেলে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা সৌরদীপ চৌধুরী। এর পর বি-টেক নিয়ে পড়াশোনার জন্য বিজয়ওয়াড়ার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। হস্টেলে থাকার এক সপ্তাহের মধ্যে সৌরদীপের মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা হস্টেলের ১১ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন ওই ছাত্র। সেটা ২৪ জুলাই। ওই ছাত্রের মৃত্যুতে শোরগোল শুরু হয় তাঁর এলাকায়। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন সৌরদীপ। পরে অন্ধ্রপ্রদেশেই সৌরদীপের দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ছেলের দেহ নিয়ে মেদিনীপুরের বাড়িতে আসেন বাবা। পরে কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে ১৯ বছরের ছাত্রের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সৌরদীপের বাবার অভিযোগ, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেন না। ভারী কোনও বস্তু দিয়ে মেরে তাঁকে খুন করা হয়েছে। ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গুন্টুর জেলার তাডেপল্লী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সেখানে তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
সন্তানহারা সুদীপের কথায়, ‘‘ছেলেকে উচ্চশিক্ষার জন্য ভিন্রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছিলাম। ভবিষ্যতে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে ছিল ছেলের। কিন্তু সব শেষ!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হস্টেলে রেখে আসার তিন দিনের মাথায় কী এমন ঘটল, তা জানতে চাই। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাই। তখন কোনও সহযোগিতা পাইনি কর্তৃপক্ষের কাছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছেলের দেহ রাখা ছিল। ময়নাতদন্ত করাতে চায়নি ওরা। জোর করে করিয়েছি।’’ সুদীপের সংযোজন, ‘‘ঘটনার পর একুশ দিন হয়ে গেল এখনও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোনও ফোন আসেনি। উল্টে ছেলেকে ভর্তি করাতে যে টাকা দিয়েছিলাম, সেটা ফেরত পাঠিয়েছে। আমি চাই, ঘটনার সত্যিটা বেরিয়ে আসুক। সিবিআই তদন্তের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী-সহ একাধিক জায়গায় চিঠি লিখেছি। হায়দরাবাদ হাই কোর্টেও মামলা করছি। তার প্রস্তুতি চলছে।’’