—প্রতীকী চিত্র।
লক্ষ্মীপুজোর আগেই লক্ষ্মীলাভ! পুজোর ক’দিনে মদ বেচে ঝাড়গ্রাম জেলায় ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা আয় আবগারি দফতরের। বিগত দিনে পুজোর ক’দিনে এত টাকা আয় হয়নি। এর মধ্যে দশমীর দিনই প্রায় ১ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে।
পুজোর মাসে জেলায় ১৪ কোটি টাকার মদ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত মদ বিক্রি হয়েছে ১০ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। সামনে আবার লক্ষ্মী পুজো রয়েছে। জেলা আবগরি দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ‘‘বিসর্জন ও লক্ষ্মীপুজো রয়েছে। যার ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে।’’ মদ বিক্রির প্রায় ৮০ শতাংশ টাকা সরকারের রাজস্ব আয় হয়।
আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত ২৪ হাজার লিটার বিয়ার বিক্রি হয়েছে জেলায়। অর্থাৎ প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বিয়ার বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়াও হুইস্কি, রাম, জিঙ্ক, ভদকা-সহ অন্য বিদেশি মদ ৩৬ হাজার ৯০০ লিটার বিক্রি হয়েছে। দেশি মদ বিক্রি হয়েছে ১১ হাজার ৬৮৮ লিটার। চলতি মাসে পুজোর আগে পর্যন্ত মদ মজুত ছিল যথেষ্ট বেশি পরিমাণে। বিয়ার ৫৩ হাজার লিটার, দেশি মদ ৫৪ হাজার লিটার, হুইস্কি, রাম, জিঙ্ক, ভদকা-সহ অন্য বিদেশি মদ ১ লক্ষ ৬ হাজার লিটার মজুত করা হয়েছিল। তবে দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘পর্যটন কেন্দ্রে তুলনামূলক ভাবে মদ বেশি বিক্রি হয়। এ বার পুজোর সময় অনেক পর্যটক এসেছিলেন। উৎসবে অনেকেই মদ্যপান করে থাকেন।’’
ঝাড়গ্রাম জেলায় পুজোয় এ বার রেকর্ড পরিমাণে পর্যটক এসেছিলেন। অনেক পর্যটক বেড়াতে এসে মদ্যপান করেন। যার ফলে বিক্রি আরও বেশি হয়। গত দুর্গাপুজোর মরসুমে জেলায় ৩ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল। গত বছর পুজোর মরসুমেই প্রায় ১১ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল জেলায়। চলতি মাসে বুধবার পর্যন্ত ১০ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। জেলা আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম জেলায় মোট লাইসেন্স প্রাপ্ত মদের দোকান রয়েছে ৩৬টি। তার মধ্যে বিয়ার বিক্রি করার লাইসেন্স রয়েছে ৩৪টি দোকানের। ৩৪টি দোকানের মধ্যে ২৬টি অফশপ। অনশপ (বার, হোটেল) ৮টি। ৮টি অনশপের মধ্যে ৪টি ঝাড়গ্রাম শহরে রয়েছে। জামবনি ব্লকের চিচিড়ায় একটি, গোপীবল্লভপুরে একটি, শিলদায় একটি, লালগড়ের সিঁজুয়ায় একটি রয়েছে। রাজ্য সরকারের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে আবগারি দফতর থেকে। মদ বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় রাজস্বের পরিমাণও বহুগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবগারি দফতরের দাবি, চোরাই পথে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা মদ বিক্রির পরিমাণও অনেকটাই কমেছে। চোলাইয়ের কড়া পদক্ষেপ করেছে জেলা আবগারি দফতর। এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন লাইসেন্স প্রাপ্ত মদ বিক্রেতারা। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রাজস্বের পরিমাণ। আবগারি দফতরের ঝাড়গ্রাম সার্কেলের ওসি অংশুমান বলেন, ‘‘বেআইনি মদ বিক্রি বন্ধ করতে লাগাতার নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। চোলাইয়ের বিরুদ্ধে সচেতন করা হচ্ছে।’’
জানা গিয়েছে, চলতি বছরে এপ্রিল থেকে পুজোর আগে পর্যন্ত মদ বিক্রি করে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। গত বছর এপ্রিল থেকে পুজোর আগে পর্যন্ত ৫৭ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে মদ বিক্রি করে। গত আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় মদ বিক্রি করে ১৩৮ কোটি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জেলা আবগারি সুপার তনয় গুহ বলেন, ‘‘এ বার মজুত ছিল। যার ফলে উৎসবের মরসুমে বিক্রি বেশি হয়েছে।’’